চেন্নাই, ১৮ সেপ্টেম্বর : এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়াম বললে একটু খটকা লাগতে পারে, তবে চিপক বললে লোকে একডাকে চেনে। ইতিহাসের চিপকের সঙ্গে এত ঘটনা জড়িয়ে আছে যে বলে শেষ করা যাবে না। এখানে দিনের বেলায় বেশ গরম। সন্ধ্যার পর মেরিনা বিচের দিক থেকে ফুরফুরে হাওয়া বয়। চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে সমুদ্র। সকালের দিকে এর হাওয়াতেই নতুন বল অনেকটা স্যুইং করে।
চিপকে লাল মাটির উইকেটে বল অবশ্য বরাবর ঘোরে। তিন নম্বর দিন থেকে বল ঘোরা শুরু হয়। যেটা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট। দুটো দলই বল ঘুরবে ধরে নিয়ে স্পিনার নিয়ে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। ভারত যেমন দুই সিমারের সঙ্গে তিন স্পিনারে খেলতে পারে। দুই সিমার বুমরা ও সিরাজ। তিন স্পিনার অশ্বিন, জাদেজা ও কুলদীপ। বাংলাদেশও তিন স্পিনারে খেলতে পারে। এই তিন স্পিনার হলেন শাকিব, তাইজুল ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
আরও পড়ুন-পয়েন্ট নষ্ট ডায়মন্ড হারবারের
বার্বাডোজে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতে আসার পর শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় ব্যাটাররা স্পিনের সামনে বেকায়দায় পড়েছিলেন। একদিনের সিরিজ হারতে হয়েছিল ০-২-তে। একসময় ভারতীয় ব্যাটারদের বলা হত স্পিনের বিরুদ্ধে দুনিয়া সেরা। কিন্তু সত্যিই কি তাই? শ্রীলঙ্কা সফর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চেন্নাইয়ে যখন বল ঘোরার ইতিহাস আছে আর বাংলাদেশ দলে তিনজন প্রতিষ্ঠিত স্পিনার রয়েছে, তাই রোহিতদের সামনে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করে আছে।
তবে গত এক দশকে ঘরের মাঠে ভারতের জয়ের রেকর্ড ৪০-৪। কিন্তু এত ভাল জায়ায় থেকেও স্পিন-কাঁটা কোথায় যেন খচখচ করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে দুটি টেস্ট-সহ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সাইকেলে মোট ১০টি টেস্ট অপেক্ষা করে আছে। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ২-০-তে হারিয়ে এই সিরিজে খেলতে এসেছে। ওখানে বাংলাদেশ স্পিনাররা পাক ব্যাটারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন। এখানে কী হয় সেটাই দেখার। তবে ২০২১ থেকে স্পিনের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলির ব্যাটিং গড় ৩০। শেষ তিন বছরে রোহিতের গড় নেমে এসেছে ৪৪-এ। আর রাহুলের স্পিনের বিরুদ্ধে শেষ পাঁচটি টেস্টে গড় ২৩.৪০।
আরও পড়ুন-এক দেশ-এক ভোট নীতি আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়, বিরোধিতায় সরব হন তৃণমূলনেত্রীই
তবে স্পিনের বিরুদ্ধে ভারতের ইয়ং ব্রিগেডের ব্যাটিং গড় বেশ ভাল। শেষ পাঁচ টেস্টে ঋষভের গড় ৭০। শুভমন গিল ও যশস্বী জয়সোয়ালও মন্দ করেননি। দুই টেস্টের এই সিরিজেও এরা ভারতীয় ব্যাটিংকে ভরসা দিচ্ছেন। থার্ড সিমারের রাস্তায় হয়তো ভারত যাবে না। গেলে যশ দয়াল ও আকাশ দীপের মধ্য কেউ দলে আসবেন। যেমন অশ্বিন ও জাদেজার সঙ্গে থার্ড স্পিনার হিসাবে হয়তো দলে আসবেন কুলদীপ। আর যদি নিচের দিকের ব্যাটিংকে আরও জোরদার করার ব্যাপার থাকে, তাহলে দলে আসবেন অক্ষর প্যাটেল। অলরাউন্ডার অক্ষরকে এতদিন সাদা বলের বোলার হিসেবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নাজমুল হোসেন শান্তর দল পাকিস্তানকে হারিয়ে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভারতে খেলতে এসেছে। বাংলাদেশ টেস্টে এখনও ভারতকে হারাতে পারেনি। ওরা বলছেন এবার জিতেই ফিরবেন। কিন্তু পুরো শক্তির ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে কাজটা যে সহজ হবে না সেটা বলই বাহুল্য। এই দলে অভিজ্ঞদের পাশে নেওয়া হয়েছে নতুন মুখ জাকের আলি অনিককে। তাঁকে অবশ্য অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।