প্রতিবেদন : ডিভিসির ছাড়া জলে বানভাসি বাংলা। এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি জেলা। জলভয়ে ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়েছে। বৃষ্টি ছিল তিনদিন। কিন্তু বাংলার মানুষের এই বানভাসি অবস্থার জন্য সরাসরি দায়ী ডিভিসি, বৃহস্পতিবারও এই অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। টানা দু’দিন তিনি একাধিক প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসনকে। বুধবার গিয়েছিলেন হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যা-কবলিত অঞ্চলে। বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর-সহ একাধিক প্লাবিত এলাকা। এদিনও রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার ডিভিসি নতুন করে জল ছাড়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পরিকল্পিত বন্যা-পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগে এবার গণ-আন্দোলনের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ঝাড়খণ্ডকে বাঁচানোর জন্য বাংলাকে ডোবাচ্ছে কেন্দ্র। বহুবার বলেও কোনও কাজ হয়নি। এবার বৃহত্তর আন্দোলন করব। একই সঙ্গে দুর্গতদের ত্রাণের কোনও অভাব যেন না হয় সেদিকে জেলাশাসক-পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে হারিয়ে কন্যাশ্রী এবার ৩ কোটি
ঘাটালের মতোই এদিন পাঁশকুড়াতেও জলে নেমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সবাইকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। একই সঙ্গে ফের জল ছাড়ায় ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যকে বিপদে ফেলতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করা হচ্ছে। আর গোটা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। বন্যার জন্য দায়ী ডিভিসি।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং মাইথন-পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া জলে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায় বন্যা-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ডিভিসি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ৫ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। আগে কখনও এত জল ছাড়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজও নতুন করে জল ছেড়েছে ডিভিসি। দ্রুত এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছি জেলাশাসককে। যাঁদের ফসল নষ্ট হয়েছে তাঁদের শস্যবিমার টাকা দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গতদের ত্রাণের কোনও অভাব যেন না হয়। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে তাঁদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্যা-কবলিত অঞ্চলের অন্তঃসত্ত্বাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মাদার্স হাবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা, দাসপুর-সহ, খড়্গপুর, কেশপুর, দাঁতন, ডেবরার ৪৫ জন মহিলাকে সরানো হয়েছে। এই জেলাতে ১১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।