শান্তনু বেরা , কাঁথি: চাকরিবাকরি না পাওয়া পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা বাবার রোজগারে খেলে তাকে ‘বাপের হোটেল’ বলে শ্লেষ হানা হয়। সেই নামেই দেখা মিলল এক হোটেলের। এখানেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবারদাবার মেলে। তবে মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। এটি হনুমান-সহ পশুপাখি ও অন্য অবলা জীবদের জন্য। নিজের বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ১ ব্লকের কুলাইপদিমা নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামল জানার এই অভিনব উদ্যোগ।
আরও পড়ুন-৭ জেলায় তাপমাত্রা বেড়ে হতে পারে ৪৫ ডিগ্রি, অগ্নিবাণে জ্বলছে পশ্চিমাঞ্চল
শ্যামলের বিবাহবার্ষিকী ২৫ এপ্রিল। সেদিন থেকেই কাঁথির আঠিলাগাড়িতে এই হোটেল চালু হয়েছে। প্রথমদিন থেকেই প্রচুর ভিড়। কারণ, গরমে পশুপাখি সবার অবস্থাই খারাপ। বাপের হোটেল-এ যথেচ্ছ খাবার ও পানীয় জল পেয়ে ওরা প্রাণে বাঁচছে। ওদের জন্য থাকছে কলা, আঙুর, শসা, কাঁচাছোলা, গম, সূর্যমুখী বীজ, ভুট্টা, বাদাম এবং অবশ্যই পানীয় জল। খাবারগুলি পরিবেশন করা হয় রংবাহারি নকশা করা, মাটির নানা মাপের পাত্রে। বাড়ির খোলা ছাদে এই হোটেল ২৪ ঘণ্টা খোলা। দড়িতে হনুমানদের জন্য সাজানো থাকে পাকাকলা। শ্যামল সারা বছরই নানা সমাজসেবামূলক কাজ করেন। কখনও দুঃস্থদের পোশাক দেন, কখনও বন্যা বা ঝড়-বিধ্বস্তদের ত্রিপল। বিভিন্ন জেলায় পাঁচ হাজার বট-অশ্বত্থের চারাও রোপণ করেছেন। ‘বাপের হোটেল’ প্রসঙ্গে শ্যামলের সাফাই, “আমি সামান্য প্রাথমিক শিক্ষক। বিবাহবার্ষিকীতে দামি উপহার দেওয়ার সাধ্য নেই। স্ত্রীকে খুশি করতে প্রচণ্ড দাবদাহে জীবসেবার জন্য এমন পরিকল্পনা নিয়েছি।” তৃতীয় বিবাহবার্ষিকীতে স্বামীর থেকে এমন উপহার পেয়ে আপ্লুত স্ত্রী মণিকা জানা।