সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার : জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বাস্ততন্ত্র রক্ষায় এই বর্ষায় এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ— ‘বৃক্ষের অবলম্বনে চারাগাছ রোপণ’। সাধারণত চারাগাছ মাটিতে পোঁতা হয়। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বৃক্ষ বৈচিত্র বাড়াতে গাছের ওপর চারা রোপণ করা হচ্ছে। ফাইকাস প্রজাতির বৃক্ষ, বনের বাস্তুতন্ত্রের মূল স্তম্ভ। অগণিত পশুপাখিকে আহার এবং আশ্রয় দেয়। আগে জঙ্গলে এই প্রজাতির বট, অশ্বত্থ, ডুমুর, পাকুড় ইত্যাদির চারা রোপণ করা হত। কিন্তু সেগুলিকে বড় করা কঠিন। কারণ ধীরবৃদ্ধির কারণে বন্যপশুদের পায়ের চাপে নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া তৃণভোজী প্রাণী, বিশেষ করে হাতি পাতা এবং শাখা খেতে পছন্দ করে। জঙ্গলের মধ্যে এই প্রজাতির যেসমস্ত বড় গাছ দেখতে যায়, সেগুলো অন্য গাছকে অবলম্বন করে বড় হয়ে ওঠে। এগুলো বহুদিন বাঁচে। পোষক গাছটি এই বৃক্ষের কাছে হার মেনে মৃত্যুবরণ করে বলেই এর এমন বৃদ্ধি ও জীবনকাল। এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিকেই অনুসরণ করে একটি গাছের উপরের শাখায় ফাইকাস প্রজাতির চারা রোপণ করার কাজ শুরু হয়েছে। রোপণ করা চারাটি শেকড় ও ঝুরি বিস্তার করে আশ্রয়দাতা গাছটিকে মেরে ফেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রাথমিক অবস্থায়, প্রায় ২০০ ফাইকাস প্রজাতির চারা পাঁচটি রেঞ্জে রোপণ করা হয়েছে। জলদাপাড়া উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম, চিলাপাতা, কোদালবস্তিতে। প্রতিটি চারার তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখছে বন দফতর। ডিএফও পরভিন কাসোয়ান জানান, এই প্রজাতির গাছ প্রকৃতির জন্য খুব উপকারী, আমরা একমাস আগে এই চারাগুলো রোপণ করে পর্যবেক্ষণে রাখছি। এখনও পর্যন্ত ভাল ফল পেয়েছি।