তার জন্য একেবারেই নতুন নয়! প্রাক্তন বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু (Markandey Katju) জন্মসূত্রে কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং লখনউয়ের ভূমিপুত্র। প্রতিবারই কাটজু ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট করেন এবং যথারীতি নিন্দার ঝড় উঠলেই তিনি সেই পোস্ট মুছে দিয়ে পিছু হটেন। গত পাঁচ বছর ধরে একপ্রকার নিয়ম করে তিনি এই কাজ করে চলেছেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই এবার তার নবতম সংযোজন হল।
গতকাল রাতে অর্থাৎ বুধবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন তুলে বাঙালির উদ্দেশে একটি প্রশ্ন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু। স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক শুরু হতেই সেই পোস্ট তাঁর সমাজমাধ্যম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। আগেও বহুবার এমন কাজ করেছেন তিনি। পোস্ট উধাও হলেও এহেন কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে সব দল নির্বিশেষে প্রাক্তন বিচারপতির নিন্দায় সরব হয়েছে।
আরও পড়ুন-‘পুলিশ কি রসগোল্লা খাওয়াবে?’ জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ টেনে কবিতার মাধ্যমে খোঁচা সুবোধ সরকারের
গতকাল রাতে প্রাক্তন বিচারপতি সমাজমাধ্যমে পোস্টটি করেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ওই পোস্টের স্ক্রিনশট তুলে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটা যদি সত্যিই এই ব্যক্তির বক্তব্য হয় এবং তিনি যদি ক্ষমা চেয়ে ডিলিট না করেন, তাহলে ইনি যে পদেই থেকে থাকুন, বাংলায় পা রেখেছেন খবর পেলে সামনে গিয়ে ঠাটিয়ে এক থাপ্পড় মারব!’ এরপরেই বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার পর থেকে প্রাক্তন বিচারপতির সমাজমাধ্যমের প্রোফাইলে ওই পোস্টটি আর দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সমালোচনার মুখে পড়েই তিনি পোস্ট মুছে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার বড় পদে থাকাকালীনও বেশ কয়েকটি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ৭৮ বছর বয়সি ওই প্রাক্তন বিচারপতি। এর আগে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পরে তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী এবং বাঙালিদের জড়িয়ে সমাজমাধ্যমে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মার্কন্ডেয় কাটজু। হাথরস-কাণ্ডের পরে তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। হাথরসের পরে তিনি লিখেছিলেন, ‘নিশ্চয়ই অন্যায় হয়েছে। তবে পুরুষ মানুষের এত দোষ ধরলে হয় না।’ দু’টি ক্ষেত্রেই পরে পোস্টগুলি মুছে ফেলেন তিনি।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে এই ধরনের আক্রমণ নতুন নয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র কিন্তু অন্যরকম। দেখা গিয়েছে, যতবার এই ধরনের আক্রমণ হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের বাক্সে মহিলা সমর্থন উত্তরোত্তর বেড়ে গিয়েছে। তবে এবার প্রাক্তন বিচারপতির দৌলতে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে রাজ্যের বিরোধী নেতাদের মন্তব্যও রাজনৈতিক মহলের আলোচনায় বার আর ফিরে আসছে ।