বড় বাজেটের হিন্দি ছবি মুক্তির সময় বাংলা ছবি যেন সঠিকভাবে প্রেক্ষাগৃহ এবং প্রাইম টাইম শো পায়, সেই আর্জি নিয়ে কিছুদিন আগেই বাংলা সিনেমাজগতের বিশিষ্টরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। এর পরেই রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, বাংলা ছবি প্রত্যেক দিন মাল্টিপ্লেক্স-সহ সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে একটি করে প্রাইম টাইম শো পাবে। এরপরেই নতুন কমিটি (সিনেমা স্ক্রিনিং কমিটি) তৈরী হয়, যার প্রথম বৈঠক হল আজ বৃহস্পতিবার ২১ অগাস্ট। এদিন বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন, স্বরূপ বিশ্বাস, ইমপা (ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন) এবং নতুন কমিটির সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, ফিরদৌসল হাসান, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, দেব, শ্রীকান্ত মোহতা, রানা সরকার, নিসপাল সিংহ রানে, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শতদীপ সাহা প্রমুখ। কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন প্রযোজক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন-দিল্লিতে একই পরিবারের তিন জনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড
এদিন বৈঠকের পর পিয়া সেনগুপ্ত জানান, ‘‘পুজোয় এই বছর চারটি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে ‘রঘু ডাকাত’, ‘রক্তবীজ ২’, ‘দেবী চৌধুরাণী’, ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। সব প্রযোজক-পরিবেশক এবং হলমালিক আজ একসাথে হয়ে যাতে সুষ্ঠু ভাবে চারটি ছবি মুক্তি পায় সেই দিকেই নজর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার পাশে আছে তাই বাংলা ছবির প্রেক্ষাগৃহ, শো এবং চাহিদা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। সব বাজেটের ছবিই যাতে এই সুবিধা ভোগ করতে পারে, সে দিকটাও দেখা হবে।”
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে স্কুলে ছাত্র খুন, অভিযুক্তর সঙ্গে বন্ধুর কথোপকথন প্রকাশ্যে
ফিরদৌসল যদিও ছবির মেধার ওপর জোর দিলেন বেশি। তিনি সাফ জানালেন, ”একদিনে সব সমস্যার সমাধান হয় না। তাই সব সমস্যা মিটে গিয়েছে এখনই সেটা বলছি না। তবে যা আলোচনা হল তা অত্যন্ত ইতিবাচক। বহু বছর ধরে বাংলা ছবির নির্মাতারা এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, এমন একটি নির্দেশিকা আনার যাতে একই সময়ে পর পর সব বাংলা ছবি মুক্তি না পায়। এর ফলে ক্ষতি প্রযোজক সহ ছবির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বহু মানুষের। এই সমাধানের জন্য আরো বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। এতে শুধু বাংলা ছবির প্রযোজকের স্বার্থ জড়িয়ে থাকে না, থাকে হল মালিক, পরিবেশকদেরও। এবারের পুজো যেহেতু আর বেশিদিন বাকি নেই তাই চিন্তাভাবনাও এগিয়ে আনতে হয়েছে। বহুদিন ধরে আমরা চার প্রযোজকই অনেকরকম পরিকল্পনা নিয়ে এই সময়ে আমাদের ছবিমুক্তির পরিকল্পনা করেছি। তাই এই চারটি ছবির মুক্তির তারিখ পিছোবে না। শো টাইমিং প্রেক্ষাগৃহের মালিকদের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে। তবে এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে উত্তর কলকাতার প্রায় কাছাকছি দু’টি প্রেক্ষগৃহ রয়েছে। সেখানে আলাদা আলাদা শো-টাইমিংয়ে দু’টো বাংলা ছবি চলুক! সমস্যা নেই। আমরা নিজেদের মধ্যে সবাই আলোচনা করে এরকম কিছু করতেই পারি। সমাধান করতে হবে এই মানসিকতা আমাদের সবার থাকলেই আর সমস্যা থাকবে না। কেউ যদি ভেবে নেন, আমারই বাংলা ছবি প্রাইম টাইমে সব প্রেক্ষাগৃহে চলবে, তাহলে সমস্যা হবে।”
প্রযোজক রানা আজকের বৈঠকের পর জানালেন,‘‘আজ পুজোর ছবির সংখ্যা নির্দিষ্ট হল। আবার বৈঠক হবে। তখন বাকি সবকিছু নির্ধারিত হবে। শীতেও একাধিক বাংলা ছবি মুক্তি পাবে। তবে তার আগে আবার বৈঠক হবে।”