নয়াদিল্লি : রবিবার টানা ন-ঘণ্টা সিবিআই জেরার মুখোমুখি হওয়ার পর সোমবার দিল্লি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সর্বাত্মক আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পাশাপাশি বিজেপির পদলেহন করে চলা সিবিআই, ইডির মত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুললেন।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেন এফআইআর নয়, জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট
সোমবার কেজরিওয়াল তাঁর ভাষণে সিবিআই-ইডির তদন্ত নিয়ে বিধানসভা দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় নিশানা করেন মোদি সরকার এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। মোদি জমানায় এই তদন্তকারী সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। নাম না করেও প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে কেজরির শ্লেষ, আপনারা ছেলেবেলায় অনেক রাজা-রানির গল্প শুনেছেন। কিন্তু আমার গল্পে কোনও রানি নেই, শুধু রাজা আছে। এটি এমন এক রাজার কাহিনি, যিনি অশিক্ষিত, মাত্র চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং সেইসঙ্গে প্রচণ্ড অহংকারী ও চরম দুর্নীতিপরায়ণ। এরপরই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
আরও পড়ুন-সারুল পুজোয় প্রকৃতির আরাধনা জঙ্গলমহলে
বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের দিকে কটাক্ষ করে কেজরিওয়াল বলেন, এটা আপনাদের নেতার গল্প নয়, আপনারাও মজা নিতে পারেন। বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে ইঙ্গিত করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একবার এক জ্যোতিষী এক মাকে বলেছিলেন, আপনার ছেলে সম্রাট হবে। সেই ছেলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে তারপর রেলস্টেশনে চা বিক্রি করত। জ্যোতিষী যেমন বলেছিলেন, ছেলেটি বড় হয়ে একটি মহান দেশের রাজা হয়েছেন। সেই রাজা খুব ভাল বক্তৃতা দিতে পারেন। রাজা জাল ডিগ্রি নিয়ে এসেছিলেন কিন্তু আরটিআই করে সেই জাল ডিগ্রির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেই মানুষকে এখন ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন-জল-দুর্ভোগ কমাতে হাওড়ায় কন্ট্রোল রুম
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আরও বলেন, কিছু লোক সেই রাজার কাছে নোটবন্দির প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল। সেই রাজা রাত ৮টায় টিভি চ্যানেলে গিয়ে নোটবন্দির ঘোষণা করেন। দেশে তোলপাড় শুরু হয়। আর এই নোটবন্দির কারণে দেশ কয়েক বছর পিছিয়ে গিয়েছে। রাজার বুদ্ধি ছিল না, রাজা অশিক্ষিত। রাজা কৃষকদের বিরুদ্ধে তিনটি কালো আইন পাস করেন। ৭০০ জনেরও বেশি কৃষক রাস্তায় মারা যায়। এমন রাজার হাতেই চলছে দেশ। নাম না করে এইভাবে মোদির একের পর এক সিদ্ধান্ত তুলে ধরে বিধানসভায় তাঁকে কটাক্ষ করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি আম আদমি পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে এজেন্সিগুলির ‘অপব্যবহারের’ প্রতিবাদে দিল্লি বিধানসভায় একটি প্রস্তাবও পাস হয় এদিন।