প্রতিবেদন : ডিজিটাল পেমেন্ট জালিয়াতির ফাঁদে কোটি কোটি টাকা গায়েব হচ্ছে ভারতীয়দের। লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে ১ লক্ষ টাকার বেশি ডিজিটাল পেমেন্ট সংক্রান্ত সাইবার জালিয়াতির কারণে ক্ষতির পরিমাণ ১০ গুণ বেড়েছে। তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ সালে ভারতীয়রা ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের সাইবার জালিয়াতির কারণে প্রায় ১৭৭ কোটি টাকা হারিয়েছে, যা ২০১৪-১৫ সালে এই ধরনের অপরাধে ১৮ কোটি টাকা ছিল।
আরও পড়ুন-চুরি যাওয়া গণেশ মূর্তি উদ্ধার করে মন্দিরে ফেরাল পুলিশ
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ধরনের সাইবার জালিয়াতির কারণে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১০৭ কোটি টাকা। মন্ত্রী বলেছেন, ২০১৪-১৫ সালে এই ধরনের উচ্চ-মূল্যের সাইবার জালিয়াতির সংখ্যা ৮৪৫ থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ সালে ২৯,০০০-এর বেশি হয়েছে। তবে, এই পরিসংখ্যানগুলিতে ১ লক্ষ টাকার কম অঙ্কের সাইবার জালিয়াতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এছাড়াও, স্টক ট্রেডিং স্ক্যাম এবং বিনিয়োগ-ভিত্তিক স্ক্যামগুলিও বাদ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পরিচালিত ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (১৪ সি) অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যে স্টক ট্রেডিং স্ক্যামের অংশ সবচেয়ে বেশি ছিল। তবে কেন্দ্রীয় প্রতিক্রিয়ায় এই শ্রেণির সাইবার জালিয়াতি কেন বাদ দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন-রাজধানী দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত জাতীয় শহর, গড় আয়ু কমছে ৫ বছর
সংসদে প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আরও জানান, আরবিআই এই ধরনের তথ্য রাখে না। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা রিপোর্ট করা ডিজিটাল পেমেন্ট জালিয়াতির তথ্যই উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অথচ রিপোর্টে ২৪ সালের প্রথম নয় মাসে (এপ্রিল-ডিসেম্বর) সাইবার জালিয়াতির কারণে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১১,৩৩৩ কোটি টাকা বলা হয়েছে। যা মন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরীর উল্লেখ করা পরিসংখ্যানের প্রায় ১০০ গুণ বেশি। কেন্দ্রের বক্তব্য, দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট জালিয়াতি-সহ প্রতারণামূলক কার্যকলাপের ঘটনাও গত কয়েক বছরে বেড়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে মন্ত্রী ডিজিটাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দায়িত্ব রাজ্য সরকারগুলির উপর চাপিয়েছেন। তাঁর সাফাই, ‘পুলিশ’ এবং ‘জনশৃঙ্খলা’ রাজ্যের বিষয়। তাঁর এই মন্তব্যেই স্পষ্ট, সাইবার জালিয়াতির দায় নিতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার।