বিজেপির প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanik) আপ্তসহায়ক পরিচয় দিয়ে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ। পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, সিতাই বিধানসভার গোসানিমারি এলাকার বাসিন্দা পরিমল। এই নিয়ে রবিবার ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিণ মাধবডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ শীল ময়নাগুড়ি থানায় প্রথম লিখিত অভিযোগ জমা করেন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ময়নাগুড়ি থানায় অভিযুক্ত পরিমল রায়ের নামে একের পর এক অভিযোগ জমা পরে সোমবার। পুলিশ সূত্রে খবর, হিতেন্দ্র বর্মণ, জনার্দন বর্মন, সম্পদ রায়, দেবব্রত রায় এবং কমল বর্মণ সকলেই মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা। তাদেরও একই অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে পরিমল রায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন- ৩ রাজ্যের একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে বদল উপনির্বাচনের দিন
মূল অভিযোগকারী বিশ্বনাথও মেখলিগঞ্জে থাকতেন বর্তমানে তিনি ময়নাগুড়ির বাসিন্দা। তিনি ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করায় বাকিরাও ময়নাগুড়িতে অভিযোগ করেছেন বলে জানা যায়। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খন্ডবহালে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মামলা রুজু হয়েছে।”
বিশ্বনাথ শীল অভিযোগের বিবরণে জানান, সিপিআইএম দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। ২০১৬ সালে এলাকায় দল তাকে মন্ডল সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দলের পদাধিকারী সূত্রে নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে তার আলাপ হয়। মন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার অনাথ ভাগ্নির চাকরির জন্য আবেদন জানান নিশীথকে। চাকরির আশ্বাস দেন মন্ত্রী এবং তাকে দিল্লি যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। কিন্তু ভাগ্নিকে সেখানে পাঠাবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বনাথ। সেখানেই নিশীথের অপ্তসহায়ক হিসাবে পরিচয় হয় পরিমল রায়ের। ধীরে ধীরে বাড়ে সখ্যতা। আপ্তসহায়ক পরিমল চাকরি করে দেওয়ার নাম করে দফায় দফায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা নেয় বলে অভিযোগ। যেই টাকা ব্যাংকের এনএফটি মারফত এবং নগদ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কোনো চাকরি করে দিতে না পারায় বিশ্বনাথ শীল টাকা ফেরত চাইতে থাকেন। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও সেই টাকা কোনোভাবেই ফেরত দেয়নি বলে অভিযোগ। গত ২ নভেম্বর পরিমল রায় তার মাকে বিশ্বনাথের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। তারপর থেকেই পরিমলের মোবাইল বন্ধ । টাকা ফেরত পাবেন না বুঝতে পেরে ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ জমা করেন অভিযোগকারী। যদিও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এই বিষয়ে অভিযুক্ত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের আপ্তসহায়ক পরিচয় দেওয়া পরিমলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ।