সংবাদদাতা, হাওড়া : বিদ্যালয় পরিচালনা এবার পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর। বেলুড়ের সরকার-পোষিত স্কুলের পরিচালন ব্যবস্থা এবং শিক্ষাক্রম নির্ধারণে চালু হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। স্কুলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর অভূতপূর্ব পরিকল্পনা সম্পূর্ণ স্কুল কর্তৃপক্ষের। এআই ব্যবহারের মাধ্যমে ‘রাইট টু এডুকেশন অ্যাক্ট’ বা শিক্ষার অধিকার আইনের মূল ভাবনাকে বাস্তবায়নের কথা ভাবা হচ্ছে। নতুন এই ভাবনায় অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে আগামী দিনে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী-সহ সকলের উপস্থিতি এবং যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত করা হবে। সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগ ও চিন্তাভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সীমিত সম্পদ দিয়েই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বেলুড় হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পরিচালন সমিতির সদস্যরা।
আরও পড়ুন-হাম-রুবেলা নির্মূল করতে বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচি
বেলুড়ের এই স্কুলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তো রয়েইছে, এই বছরে স্কুলে একাদশ শ্রেণির ভর্তিও হয়েছে সম্পূর্ণ অনলাইনে। ‘বিলডেস্ক’ নামের বিনামূল্যের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে একাদশের ছাত্রছাত্রীরা তাদের ভর্তির যাবতীয় টাকা অনলাইনেই জমা করেছে স্কুলের এই নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্কুলের শিক্ষাক্রম থেকে সমস্ত ছাত্রছাত্রীর যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটের তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত করা হয়। এমনকী, প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর জন্মদিনে তাদের ছবি-সহ শুভেচ্ছা জানানো হয় ওয়েবসাইটে। এমনকী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি ও বেতন সংক্রান্ত জরুরি তথ্যও তাঁরা অ্যাপের সাহায্যে জেনে নিতে পারছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহ-শিক্ষকরা নিজেরাই চ্যাট জিপিটি, জেমিনি বা ক্লদের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবটের সাহায্য নিয়ে বানিয়েছেন ওয়েবসাইট। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজকুমার বিশ্বাসের কথায়, এখন স্কুলের অনেক কাজ বেড়েছে। শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষা নেওয়া ছাড়াও অনেক সরকারি কর্মসূচির কাজও করতে হয়। ফলে প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। যতদূর সম্ভব খরচ না বাড়িয়ে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে নিজেরাই স্কুলের নিজস্ব প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, এর ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অন্য কাজে মাথা না ঘামিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার দিকে বেশি নজর দিতে পারছেন। স্কুলগুলিতে সবুজসাথীর সাইকেল, কন্যাশ্রীর প্রকল্প–সহ অন্য নানা সরকারি প্রকল্পের সহায়তা মেলে। স্কুলে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে, সে-সব কাজ এখন অনেক সহজেই করা যাচ্ছে। নতুন এই ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে এই বছরে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে। আগের বছর যেখানে বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য মিলিয়ে ১২২ জন ভর্তি হয়েছিল, এই বছরে ১৬২ জন ভর্তি হয়েছে।