৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু, থাকছেন বড় সংখ্যায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, রূপরেখা চূড়ান্ত, বিজিবিএসের প্রস্তুতি তুঙ্গে

ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানসূচির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে রাজ্যের শিল্প দফতর সূত্রে খবর। শেষ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসেছিল ২০২৩ সালে।

Must read

প্রতিবেদন : কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারির ৫ ও ৬ তারিখ রাজ্যে বসছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর। সম্মেলনে দেশের শিল্পপতিদের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন বহু বিদেশি বিনোয়োগকারী। এবারও বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টার ও বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণ মিলিয়ে সম্মেলন হবে। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানসূচির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে রাজ্যের শিল্প দফতর সূত্রে খবর। শেষ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসেছিল ২০২৩ সালে। সেবছর ১৭টি দেশ এবং ৪০০র বেশি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন। এবছরও বিরাট সংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রতিনিধির উপস্থিতি আশা করছে নবান্ন।
গত বছর বাণিজ্য সম্মেলনে এমএসএমই বা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে সামনে রাখা হয়েছিল। জানা গিয়েছে এবার বিনিয়োগ গন্তব্য হিসাবে পর্যটন এবং সিনেমাক্ষেত্রকে বিশেষভাবে নজরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, সব ধরনের শিল্পের ওপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। আগেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বড় শিল্প, উৎপাদন ক্ষেত্র, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, পরিকাঠামো, পর্যটন, সিনেমা ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলিতে একেকটি করে কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এই ক্ষেত্রে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের পথ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এদিকে তাজপুর বন্দর গড়তে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য। এজন্য পুনরায় গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিষয়ে আইনি পরামর্শ গ্রহণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ফলে এবিষয়ে আগামী দিনে রাজ্য কী পদক্ষেপ করে সেদিকেই নজর রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের। যেহেতু প্রতি বছর ভারী ও ক্ষুদ্র শিল্পের পাশাপাশি পর্যটনকে বাণিজ্য সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেজন্য এবারের সম্মেলনে আলাদা করে কোনও ক্ষেত্রকে ‘থিম’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে না। সামগ্রিকভাবে রাজ্যে শিল্পায়নের আবহকেই বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হবে। এদিকে পরিবেশবান্ধব শিল্প তৈরির বিষয়ে নতুন এক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে চায় রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতর। অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদন এবং কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। বিজিবিএস-এ এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-বাঘাযতীন-কাণ্ডে ২ ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ, বিল্ডিং রুলসে বদল চেয়ে প্রস্তাব পুরসভার

ইতিমধ্যেই রাজ্য এই বিষয়ে দু’টি নতুন নীতি প্রণয়ন করেছে। প্রথমটি ‘গ্রিন হাইড্রোজেন পলিসি’, যা অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহারকে উৎসাহিত করবে এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদনে সহায়তা করবে। দ্বিতীয়টি ‘নিউ অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোমোশন পলিসি’, যার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে। শিল্প দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তোলার জন্য জমির কনভার্সন ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি এবং বিদ্যুৎ খরচের উপর ছাড় দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য এমন শিল্পকে উৎসাহী করা, যা কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে পরিবেশরক্ষায় সাহায্য করবে। পূর্ব কলকাতার ধাপা যা আগে শুধু ডাম্পিং গ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন তা শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। ধাপার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতির ফলে এই অঞ্চল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, যা স্থায়ী উন্নয়নের একটি উদাহরণ। পাশাপাশি, নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) প্রতি দিন পাঁচ টন জৈব বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিউ টাউনের রাস্তাগুলি আলোকিত রাখা হচ্ছে। সুন্দরবনের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন উদ্যোগ স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করছে। সরকার পক্ষ আশা করছে, আসন্ন শিল্প সম্মেলনে এই নীতিগুলির সম্ভাবনা তুলে ধরার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।

Latest article