মণীশ কীর্তনিয়া, দিঘা: জগন্নাথধামের উদ্বোধন। বিরাট কর্মযজ্ঞ। মন্ত্রী-তারকা থেকে আমজনতা। সৈকত শহর ফুটছে উন্মাদনায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সবটা মনিটর করছেন। প্রতিমুহূর্তে খোঁজ নিচ্ছেন সব ঠিক আছে কি না। আন্তর্জাতিকমানের এই কর্মযজ্ঞ যাতে ত্রুটিহীনভাবে সম্পন্ন করা যায়, তার জন্য ৫ মন্ত্রীকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে দিঘা পাঠিয়েছেন আগেই। নির্দেশ মেনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, পুলক রায় এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী গত কয়েকদিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে আছেন দিঘায়। দিন-রাত এক করে ফেলছেন গোটা ব্যবস্থাপনা ত্রুটিমুক্ত করতে। এছাড়াও আছেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও।
দিঘায় জগন্নাথধাম আন্তর্জাতিক মহলের নজর টানতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। আজ বুধবার দ্বারোদ্ঘাটন ও প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার আগে মঙ্গলবার হয়ে গেল মহাযজ্ঞ। সোমবার থেকে অতিথিরা চলে এসেছেন দিঘাতে। দিঘায় এখন উৎসবের মেজাজ। পরিবহণ থেকে জলের ব্যবস্থা। দমকল থেকে মেডিক্যাল সাপোর্ট— সবদিকেই নজর রাখছেন এই পাঁচ মন্ত্রী। সোমবার দিঘায় পৌঁছে দফায় দফায় মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। সেই নির্দেশ মেনে পাঁচ মন্ত্রী সোমবার অনেক রাত পর্যন্ত টানা কাজ করে গিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের তদারকিতে নেমে পড়েছেন তাঁরা। বিরাট কর্মকাণ্ডে বিদ্যুৎব্যবস্থা যথাযথ রাখতে সকাল থেকে ছুটছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ প্রয়োজনে বৈঠক করছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন৷ বিরাট এই কর্মযজ্ঞে সকাল থেকে রাত ক্লান্তিহীন ছুটে বেড়াচ্ছেন অরূপ। অহরহ ফোনে নির্দেশ আসছে মুখ্যমন্ত্রীর। সঙ্গে সঙ্গে সেই নির্দেশ পালনে লেগে পড়ছেন মন্ত্রী। কার্যত দম ফেলার ফুরসত নেই।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও আগাম সাবধানতা মাথায় রেখে ১৫টি অতিরিক্ত ইঞ্জিন জগন্নাথধামে রেখেছেন৷ জলের ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ৷ কোনও ফাঁক রাখছেন না মন্ত্রী পুলক রায়৷ অতিথি-অভ্যাগতদের যাতায়াতের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখছেন স্নেহাশিস চক্রবর্তী৷
মন্দিরের ধ্বজা লাগানো থেকে মহাযজ্ঞের ত্রুটিহীন ব্যবস্থা রাখতে তীক্ষ্ণ নজর ছিল সকলের। সবথেকে বড় কথা— মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল এই তিনদিনের উদ্বোধন কর্মসূচি করতে গিয়ে জনজীবন যেন অচল না হয়ে পড়ে। সে-দিকেও খেয়াল রাখতে হয়েছে। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, দিদি আমাদের যেভাবে কাজ করতে বলছেন আমরা সেভাবেই এখানে দায়িত্ব পালন করছি। আশা করছি নিখুঁতভাবেই সবটা উতরে যাবে।
এই আবহে দিঘায় তারকার মেলা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকেই ইতিমধ্যে এখানে চলে এসেছেন। বুধবারও আসবেন। মন্ত্রীদের মধ্যে অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, ইন্দ্রনীল সেন, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পুলক রায় এসেছেন। এসেছেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী, নচিকেতা চক্রবর্তী, অদিতি মুন্সি, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, দেবলীনা কুমার-সহ অন্যরা। এছাড়াও শিল্পপতিদের মধ্যে এসেছেন রিলায়েন্সের তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, সত্যম রায়চৌধুরী, উমেশ চৌধুরী, সঞ্জয় বাঙ্গার, দেবাঞ্জন মণ্ডল, মায়াঙ্ক জালান প্রমুখ। এদিনের মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা অরিন্দম শীল, দেব, সোহম চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, প্রযোজক শ্রীকান্ত মেহতা, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র, গার্গী রায়চৌধুরী। ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার, এসপি সৌম্যকান্তি ভট্টাচার্য, ডিএম পূর্ণেন্দু মাজি, সচিব স্তরের আমলা বন্দনা যাদব ও সৌমিত্র মোহন, রূপক বড়ুয়া, বইমেলা কমিটির সুধাংশু দে, বিধায়ক মদন মিত্র, সুপ্তি পাণ্ডে, কৃষ্ণপ্রতাপ সিং, সন্দীপরঞ্জন বক্সি, শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনেশ বাজাজ, দেবাংশু ভট্টাচার্য, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, অখিল গিরি, সুপ্রকাশ গিরি, উত্তম বারিক, সৌমেন মহাপাত্র-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের দলীয় নেতৃত্ব। এছাড়াও ছিলেন মোহনবাগান কর্তা দেবাশিস দত্ত, সৃঞ্জয় বোস, ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার, আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।