প্রতিবেদন: মেহুল চোকসি এবং নীরব মোদির পর এবার যতীন মেহতা (Jatin Mehta)। জন্মসূত্রে এই গুজরাতি ব্যবসায়ীও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ না করেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছেন। তবে শুধু যতীন (Jatin Mehta) নয়, এই প্রতারণার ঘটানায় জড়িয়ে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সোনিয়া মেহতা এবং দুই ছেলে বিশাল ও সূরজ। ব্যাঙ্ক প্রতারণার ইতিহাসে টাকার অংকটা তৃতীয় বৃহত্তম। প্রথম দুই স্থানে রয়েছেন যথাত্রমে বিজয় মালিয়া ও নীরব মোদি।
আরও পড়ুন: ছাত্রাবস্থার বোকা কথাই পিছিয়ে দিচ্ছে ঋষিকে?
বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, জন্মসূত্রে গুজরাতি এই হিরে ব্যবসায়ীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের গোপন আঁতাতের ফলেই তাঁরা দেশ ছেড়ে পালাতে পেরেছেন। ইতিমধ্যেই যতীনের মালিকানাধীন উইনসাম ডায়মন্ডস অ্যান্ড জুয়েলারি লিমিটেডের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে লন্ডনের হাইকোর্ট। ওই নির্দেশের পরেই যতীন সপরিবার লন্ডনের প্রাসাদোপম বাড়ি ছেড়ে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস দ্বীপপুঞ্জের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। বলা যেতে পারে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এই সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস দ্বীপটি পলাতক ও প্রতারক শিল্পপতিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। কারণ এই দ্বীপে কর দিতে হয় নামমাত্র। পাশাপাশি কোনও নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবন বা তাঁদের আয়ের উৎস নিয়ে সরকারের কোনও রকম মাথা ব্যাথা নেই।
ব্যাঙ্ক প্রতারণার দায়ে গুজরাতের এই হিরে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআই লোক দেখানো তদন্তে নামলেও যতীনের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আটকানো যায়নি। এমনকী, কোনও এক অজানা কারণে যতীন বা তাঁর পরিবারের কাউকেই প্রত্যর্পণ করার জন্য অনুরোধ জানায়নি নরেন্দ্র মোদি সরাকার। তবে, যতীনের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য লন্ডনের আদালতে মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাঙ্ক। তার প্রেক্ষিতেই লন্ডনের আদালত যতীনের যাবতীয় সম্পত্তি ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাকেত গোখলে তথ্য জানার অধিকার আইনেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এমন ৫০টি সংস্থার নাম জানতে চান যারা স্বেচ্ছায় ঋণ শোধ করেনি। ওই প্রশ্নের উত্তরে আরবিআই-এর তথ্য আধিকারিক একটি পরিসংখ্যান দেন। ওই পরিসংখ্যান থেকেই যতীনের নাম জানা যায়। অভিযোগ, গুজরাতি হওয়ার কারণেই মোদি সরকারের আনুকূল্য পেয়েছেন যতীন। সেকারণেই তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পেরেছেন।