প্রতিবেদন : আবার সেই অভিশপ্ত অগাস্ট মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট নিজের ধানমন্ডির বাড়িতে সপরিবারে নিহত হন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবর রহমান (Sheikh Mujiboor Rahman)। ঘটনাচক্রে ২০২৪-এর অগাস্টেই দেশজোড়া বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগী হতে হল মুজিবকন্যা হাসিনাকে। ইতিহাসের এক অদ্ভুত সমাপতন।
আরও পড়ুন-সাতসকালে উল্টোডাঙার একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
এই রাজনৈতিক পালাবদলে প্রায় ৩০০ মানুষের মৃত্যুর পরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এখন ধ্বংসের ছবি। সোমবার হাসিনা ও আওয়ামি লিগ সরকারের উপর চরম আক্রোশ দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর মূর্তির উপরে উঠে, তাঁরই মুখে-মাথার উপর হাতুড়ি চালাল একদল লোক। দেশে সুষ্ঠু শাসনের দাবি জানাতে স্বাধীন বাংলাদেশের জনকের মূর্তিকেই মাটিতে নামিয়ে আনল উন্মত্ত জনতা। কোথাও তাঁর ছবি দিয়ে তৈরি ভাষ্কর্যে পড়ল শাবলের ধাক্কা। সেইসঙ্গে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত মিউজিয়ামে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। আগুনে কার্যত ভস্মীভূত মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
আরও পড়ুন-গরু নয় তবুও নাম তার নীলগাই
হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনের অভিমুখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার মুহূর্ত থেকেই লাগামছাড়া। সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ্জামান দেশের মানুষের কাছে শান্তিরক্ষার আবেদন জানিয়ে দ্রুত অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। সোমবার পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী নিজের বাসভবন (গণভবন) ছেড়েছেন খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাজার হাজার মানুষ স্রোতের মতো ঢুকে পড়ে গণভবনের গেট থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অন্দরমহলে। কেউ বিছানায় শুয়ে উল্লাস করতে থাকেন। কেউ ফ্রিজ থেকে খাবার নিয়ে খেতে শুরু করেন। এই ছবি মনে পড়িয়ে দিয়েছে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের বাড়ি এভাবে জনতার দখলে চলে যাওয়ার কথা। এদিন গণভবনের পরিখার জলে সাঁতার কেটে, নৌকা চালিয়ে মাছ ধরতেও বাকি রাখেননি তথাকথিত আন্দোলনকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বালিশ, কম্বল থেকে জামদানি শাড়ি, রুইমাছের ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকী বাসভবনের আসবাব লুঠ করতেও দেখা যায়। হামলা চলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ-উজ-জামান খানের বাসভবনে। শেখ হাসিনার স্বামীর বাড়ি সুধা সদনে হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বাদ যায়নি সাধারণ মানুষের দোকানপাট, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও চলে হামলা।