কথা রাখেনি কেন্দ্র, মুড়িগঙ্গায় সেতু করছে রাজ্য সরকারই: গঙ্গাসাগর জাতীয় মেলা হবেই, কপিলমুনিতে প্রত্যয়ী মুখ্যমন্ত্রী

Must read

দেবনীল সাহা, গঙ্গাসাগর: গঙ্গাসাগর (Gangasagar Mela) জাতীয় মেলা হবেই। প্রত্যয়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কপিলমুনির মন্দিরে দাঁড়িয়ে জ্ঞানদাস মোহন্ত মহারাজ ও জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে দৃপ্তকণ্ঠে একথা জানালেন আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, বহুবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গাসাগরের জন্য কিছু করেনি। একটা টাকাও দেয়নি। এই মেলাকে জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণাও করেনি। সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ও খরচায় এত বড় মেলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, কুম্ভমেলাকে কেন্দ্রীয় সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা দেয় এবং জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এতে আমাদের আপত্তিও নেই। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা কেন জাতীয় মেলার তকমা পাবে না? লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এই মেলায় আসেন কত কষ্ট করে। ভারতবর্ষে একমাত্র মেলা যেখানে নদী পেরিয়ে আসতে হয়।

রাজ্য সরকার ড্রেজিং-সহ ভেসেল পারাপারের ব্যবস্থা করেছে। লট ৮ থেকে কচুবেড়িয়া হয়ে সাগর পর্যন্ত যাতে নির্বিঘ্নে পুণ্যার্থীরা পৌঁছাতে পারেন তার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। মানুষের এই কষ্ট লাঘবে রাজ্য সরকার মুড়িগঙ্গার ওপরে সেতু তৈরি করছে। ইতিমধ্যেই ডিপিআর হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রকে বলা সত্ত্বেও করেনি। রাজ্যই দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই সেতু তৈরি করছে। দু-তিন বছর সময় লাগবে। কারণ, অত্যন্ত কঠিন কাজ।

আরও পড়ুন- একছাতার তলায় সব পরিষেবা, সেবাশ্রয় যেন গরিবের সঞ্জীবনী

সোমবার দুপুরে গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Mela) হেলিপ্যাডে নেমে প্রথম বাংলাদেশ থেকে ফেরত ৯৫ জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের হাতে ১০ হাজার টাকা এবং উপহার তুলে দেন। একজন মৎস্যজীবী মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী যান ভারত সেবাশ্রম সংঘে। কথা বলেন সেখানকার মহারাজদের সঙ্গে। গরিব-দুঃখীদের বস্ত্র বিতরণ করেন। এরপর যান কপিলমুনির আশ্রমে। সেখানে প্রধান পুরোহিত জ্ঞানদাস মহারাজের সঙ্গে দেখা করে তাঁর শরীরের খোঁজখবর নেন। কপিলমুনির মন্দিরে পুজোও দেন।

এরপর মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, প্রায় সাগরের ঢেউয়ে এই মন্দির-চত্বর সংলগ্ন অংশ ভেঙে যায়। এর আগেও তিনবার ভেঙেছে। মন্দির সরিয়ে নিয়ে আসতে হয়েছে। এটা কংক্রিটের ঢালাই হলে এর থেকে মুক্ত হওয়া যাবে। জ্ঞানদাস মহারাজকে আমি অনুরোধ করেছি, কপিলমুনি ট্রাস্টে বা মন্দিরে যত টাকা পড়ে তা উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়— এবার সেখান থেকে ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে কংক্রিটের ঢালাই করে দিক মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁর এই অনুরোধে জ্ঞানদাস মহারাজ সম্মতি দিয়েছেন বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যয়ী ঘোষণা— মন্দির কর্তৃপক্ষ ঢালাই করে দিক আর আমরা গঙ্গাসাগর সেতু করে দিচ্ছি। এরপর জাতীয় মেলা হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। এতে গঙ্গাসাগর-সহ সুন্দরবনের লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। এদিন জ্ঞানদাস মহারাজের সঙ্গে আলোকসজ্জার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Latest article