প্রতিবেদন : ইতিহাস বদলের চেষ্টা জারি। কোনও জায়গার মুসলিম-ঘেঁষা নাম দেখলেই তা বদল করে ফেলা মোদি ও যোগী জমানায় এখন বিজেপির রুটিন কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকেই এভাবে ইতিহাস বদল করে গৈরিকীকরণের পথে এগোচ্ছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে এই নামবদলের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে। উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ ও ফৈজাবাদের পর এবার গাজিয়াবাদেরও (Ghaziabad Name Change) নতুন নামকরণ করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। উত্তরপ্রদেশের কিছু হিন্দু সংগঠন ক্রমাগত এর জন্য দাবি তুলছে। ব্যাপক প্রচারও চালানো হচ্ছে তা নিয়ে। মঙ্গলবার গাজিয়াবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সভায় প্রথমবারের মতো এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয় বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে গৈরিকীকরণের পথে হেঁটে এলাহাবাদ হয়েছে প্রয়াগরাজ, মুঘলসরাই হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায় নগর, ফৈজাবাদ হয়েছে অযোধ্যা, ফিরোজাবাদ হয়েছে চন্দ্রনগর, আলিগড় হয়েছে হরিগড়। নামবদলের এই তালিকায় নতুন সংযোজন গাজিয়াবাদ। এর আগেও যেসব জায়গার নামের সঙ্গে মুসলিম নামের সাদৃশ্য পাওয়া গিয়েছে, পদ্ম শিবিরের নির্বিচার কোপ পড়েছে সেইসব জায়গার উপরে। এবার সেই তালিকায় যোগ হল গাজিয়াবাদ (Ghaziabad Name Change)। গাজিয়াবাদের নাম বদলে দুটি নামের প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘গজনগর’ এবং ‘হরনন্দি নগর’। মেয়র সুনীতা দয়াল জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই গাজিয়াবাদের নাম পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ আসছে। স্থানীয় দুধেশ্বরনাথ মন্দিরের পুরোহিত মহন্তনারায়ণ গিরি গত বছর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়ে নাম পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- নেতাদের গ্রেফতার করে ফাঁকা এলাকায় ভোটে জেতার বিজেপির চক্রান্ত ব্যর্থ হবে : মুখ্যমন্ত্রী
উল্লেখ্য, হিন্দন নদীর তীরে অবস্থিত গাজিয়াবাদের ইতিহাস হস্তিনাপুরের সঙ্গে যুক্ত বলে কথিত। এই নাম গজ অর্থাৎ হাতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৭৩৯ সালে নাদির শাহ এই অঞ্চল আক্রমণ করেন। সেই অনুযায়ী ১৭৪০ সালে গাজিউদ্দিননগর প্রতিষ্ঠা করলেও ব্রিটিশ আমলে এই নাম উচ্চারণে ব্রিটিশরা সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাই ১৮৬৪ সালে এই জায়গার নাম পরিবর্তন করে গাজিয়াবাদ রাখা হয়।