অপরাজিতা জোয়ারদার, রায়গঞ্জ : কুলিক পাখিরালয়ে দেখা মিললো বিরল গ্লসি আইবিসের। লাল পা, চকচকে বাদামী, সবুজ রঙ-এর এই বিরল পাখিকে গত বছর রায়গঞ্জ কুলিক পাখিরালয়ে প্রথমবার গুটি কয়েকের দেখা মিললেও এবছরই প্রথম শতাধিক সংখ্যায় এসেছে এরা। পরিবেশবিদ চন্দ্রনারায়ণ সাহা বলেন, এই প্রজাতির পরিযায়ী পাখি মূলত আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকায় দেখা যেত। এখন ভারতীয় উপমহাদেশেও দেখা মিলছে। এরা মূলত জলাভূমির ধারে বসতি গড়ে। জলাভূমি নির্ভর এদের খাদ্য সংগ্রহ। চকচকে এই পাখি অগভীর জলে খাবার খায় এবং মিঠাপানি বা লোনা জলাভূমিতে বাসা বাঁধে যেখানে গাছপালা, নিচু গাছ বা ঝোপ থাকে। চকচকে আইবিসের খাদ্য ঋতু অনুসারে পরিবর্তনশীল এবং যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভর করে। শিকারের মধ্যে রয়েছে লার্ভা পোকামাকড় যেমন জলজ পোকা, ড্রাগনফ্লাই, ড্যামসেলফ্লাই, ফড়িং, মাছি এবং ক্যাডিসফ্লাই, অ্যানেলিডা সহ জোঁক, শামুক এবং ঝিনুক, কাঁকড়া, ছোট সাপ। এই প্রজাতিটি একটি মাঝারি আকারের আইবিস।
আরও পড়ুন-নারী নিরাপত্তায় কোচবিহারে পিঙ্ক পেট্রোলিং ভ্যান
এটি সাধারণত ৪৮-৬৬ সেমি লম্বা হয়। প্রজননকারী প্রাপ্তবয়স্কদের লালচে-বাদামী দেহ এবং চকচকে সবুজ ডানা থাকে। এই প্রজাতির লাল-বাদামী পা থাকে। যদিও করমোনেন্ট প্রজাতীর সাথে বেশি বন্ধুত্ব নেই এদের। তাই মাঝে মধ্যেই এদের ঝগড়া আটকাতে ভূমিকা গ্রহণ করতে হয় বনকর্মীদেরই। তাই বনবিভাগের উদ্যোগে এদের উপর নজর রাখা হয়। উল্লেখ্য, রায়গঞ্জ বনবিভাগের উদ্যোগে শেষ হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কুলিক পক্ষীনিবাসের পাখি গণনার কাজ। পড়ুয়াদের মধ্যে পরিযায়ী পাখিদের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে এবারই প্রথম পড়ুয়াদেরকে পাশে নিয়েছে রায়গঞ্জ বনবিভাগ।
আরও পড়ুন-বন্যা পরিস্থিতিতে সতর্ক প্রশাসন, জলমগ্ন তারাপীঠ, কঙ্কালীতলা
ছাত্র ছাত্রীরাও খুশি গণনায় অংশ গ্রহণ করে। রায়গঞ্জ বনবিভাগের আধিকারিক ভূপেন বিশ্বকর্মা বলেন, উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে রায়গঞ্জ কুলিক পাখিরালয়ে এবারের পরিযায়ী পাখি গণনা হয়েছে। গ্লসি আইবিস একটি বিরল প্রজাতীর পাখী। এর আগে এখানে এদের দেখা মেলেনি। স্বাভাবিক ভাবেই হাজার হাজার পরিযায়ীদের সঙ্গে পর্যটকরা এই পাখীর দেখা পেতে রায়গঞ্জ কুলিকে আসবেন বলে আশাবাদী সকলে।