সংবাদদাতা কাটোয়া : ফি-বছর উৎসবের মরশুমের দিকে চেয়ে থাকেন গাইয়ে, বাজিয়ে থেকে শুরু করে খেলনা, গৃহস্থালির টুকিটাকি, জিলিপি-পাঁপড় বিক্রেতারা। এবার তাঁরা খুশি। কমবেশি ‘লক্ষ্মীলাভ’ হয়েছে সকলেরই। দুর্গাপুজোয় প্রায় সব পুজো উদ্যোক্তারাই জলসার আয়োজন করেন। ডাক পড়ে বাউল, লোকগীতি, পল্লীগীতি, আধুনিক গানের শিল্পীদের। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গত ২ বছর পুজো মণ্ডপের জলসার শতরঞ্চি ফাঁকা থাকায়, স্থানীয় শিল্পীদের মুখ শুকনো করেই কাটাতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন-দুর্গাপুজোর মতোই লক্ষ্মীপুজোতেও কার্নিভাল
পুজোর সময় অপেশাদার যাত্রার আসর বসে প্রায় সব গ্রামেই। গত ২ বছর করোনার জন্য প্রেক্ষাগৃহ ছাড়া খোলা মঞ্চে যাত্রা করার হুকুম ছিল না। তাই অপেশাদার যাত্রাপার্টির জন্য পোশাক, অভিনেত্রী, মেকআপ ম্যান সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোও মাছি তাড়িয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম ২ বর্ধমান জেলাজুড়ে ড্রেস কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ মুখ চুন করে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এবার করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা তেমন না থাকায় গ্রামে গ্রামে জলসা আর যাত্রার আসর বসায় দুটো পয়সার মুখ দেখেছেন সকলেই। বহু জায়গায় পুজো উপলক্ষে মেলা বসে। ছোটদের খেলনা, বন্দুক, গৃহস্থালির জিনিসপত্র, বাদামভাজা, জিলিপি, ফুচকার দোকান দেন অনেকে। কালনা মহকুমা মেলা ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সুব্রত সরকারের কথায়, ‘‘এই মহকুমায় মেলায় বিভিন্ন দোকান দিয়ে সংসার চালান শ’তিনেক মানুষ। গত ২ বছর তাঁরা একরকম বসেই ছিলেন। এবার অবশ্য সকলেরই অনেকটাই পুষিয়েছে।’’
আরও পড়ুন-জল জমলেই বাড়ির মালিককে নোটিশ
গতবার মেলায় দোকান দিয়ে যাঁরা পেট চালান, তাঁদের ২ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিল সরকার। সরকার পাশে দাঁড়ানোয় শুকিয়ে মরতে হয়নি। এছাড়াও প্রতিমার সাজ তৈরি করে রুটি-রুজি জোটে বহুজনের। কালনা ও কাটোয়ার বহু ছোট-বড় কারখানায় তৈরি প্রতিমার সাজ ভিনরাজ্য তো বটেই, বিদেশেও যায়। গত ২ বছর গণপরিবহণ ব্যবস্থা ঠিকঠাক না থাকায় চাহিদা ছিল না। এবার পরিস্থিতি বদলানোয় কারিগরদের মুখে চওড়া হাসি। গণপরিবহণ ব্যবস্থা ঠিকমতো চালু না হওয়ার করোনাকালে আঁচ পড়েছিল তাঁতশিল্পেও।