প্রতিবেদন : আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করেছে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। অতিমারির বাধা বা একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তাতে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। আর রাজ্য সরকারের এই তৎপরতায় তৈরি হয়েছে নতুন মাইল ফলক। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর অক্টোবর মাসে রাজ্যের ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৪০০টি বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে। এই প্রকল্পে প্রথম স্থানে আছে কর্ণাটক। তারপরেই সকলকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থানে চলে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ।
জানা গেছে আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে জলস্বপ্ন প্রকল্পে কাজের গতিতে প্রথম স্থানে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। তবে অক্টোবর মাসে দুর্গোৎসব এবং ছুটিছাটা জন্য কাজের গতি কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি বাধা হয়েছে একাধিক জেলার বন্যা পরিস্থিতি। তবে তাকে কাটিয়েই কাজ করে চলেছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরে কর্মী আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন : বিধানসভার অধিবেশনে অংশগ্রহণ করছেন না বিজেপি বিধায়করা
প্রশাসনিক সূত্রের খবর জলস্বপ্ন প্রকল্পের বাজেটে কোনও কার্পণ্য করা হচ্ছে না। নির্ধারিত পাঁচ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই প্রকল্পকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব। সরকারি রিপোর্ট বলছে, মে (ওই মাসেই শপথ নিয়েছিল নতুন সরকার)-তে ঘরে ঘরে নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ৪১ হাজার। জুনে তা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হয় প্রায় ৮৩ হাজার। জুলাই এবং অগস্টে সেই সংখ্যা আরও বেড়ে হয় যথাক্রমে প্রায় ১.৬৩ লক্ষ এবং ২.৩৮ লক্ষ। উল্লিখিত প্রথম দু’মাসে গোটা দেশের মধ্যে বাংলার অবস্থান ষষ্ঠ হলেও জুলাই এবং অগস্টে তা হয় যথাক্রমে পঞ্চম এবং প্রথম। গত বছর থেকে এ-পর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রায় ৩০ লক্ষ জল-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে প্রতিটি গ্রামকে সজল গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জল স্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পের অধীনে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে গ্রামের দু’কোটি মানুষের কাছে পরিশুদ্ধ জল পৌঁছে যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের অধীনে ৫৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ চলছে। বাংলার প্রতিটি ঘরে জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে মুখ্যমন্ত্রী গত বছরের ৬ জুলাই এই প্রকল্পের সূচনা করেন। প্রকল্পের বাজেট মোট ৫৮ হাজার কোটি টাকা। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান দৈনিক জল সংযোগের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০ হাজার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে ১ কোটি ৬৩ লক্ষের মতো গ্রামীণ পরিবার রয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২.১৯ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছেছে। ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে ৯৯৩.৮৮ কোটির মধ্যে ৪২৮.৩৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চলতি বছর এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রের বরাদ্দ মিলিয়ে প্রায় ৫৭৭০ কোটি টাকা রয়েছে।