আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি রাজ্য উত্তাল। এই ঘটনার জেরে রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান না নেওয়ার কথা জানিয়েছে কয়েকটি পুজো কমিটি। এ নিয়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার, নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, যে সব পুজো কমিটি সরকারি অনুদান নেবে না, তাদের বাদ দিয়ে নতুন পুজো কমিটিদের অনুদান দেওয়া হোক। তিনি জানান, মঙ্গলবার থেকে পুজোর অনুদান দেওয়া শুরু হবে। মমতার কড়া বার্তা, পুজো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব, এটা নিয়ে কোনও কুৎসা-অপপ্রচার না হয়।
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান, “পুজোর টাকার যে ফান্ডিং, এ বার এক্সট্রা কিছু রিকোয়েস্ট আমাদের কাছে এসেছে। সবটা হয়তো পারব না। ৪৫০ কোটি খরচ হয় ক্লাবগুলিকে দেওয়া জন্য। সেই টাকা আগামিকাল থেকে দেওয়া শুরু হবে। তার জন্য আমি বলে দিচ্ছি।“ এর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানান, “যদি কেউ না নিতে চান, ঠিক আছে। নতুন যে লিস্ট এসেছে, বা আবেদন করেছেন, তাদের দিয়ে দেবেন। নতুন অনেকের আবেদন আমাদের কাছে এসে পড়ে আছে। সবাইকে হয়তো পারব না একসঙ্গে দিতে। কারণ, টাকাটা বেড়ে অনেকখানি হয়ে গিয়েছে।“
আরও পড়ুন: জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবি মানবে না বাংলাদেশ
আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে দুর্গাপুজো না করার যে হুজুগ স্যোশাল মিডিয়ায় তোলা হয়েছে, তা নিয়েও তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, বার্তা, পুজো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব, এটা নিয়ে কোনও কুৎসা-অপপ্রচার না হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই পুজোকে কেন্দ্র করে অনেকের রুজিরোজগার হয়। তেমনি অনেক বিদেশি অতিথিরা আসেন। সারা দেশ থেকে মানুষ আসেন। তাঁদের যেন কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সেটাও দেখতে হবে।“
দুর্গাপুজোর সময় নিরাপত্তা নিয়েও একগুচ্ছ নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “পুলিশি অ্যাকশন এখন থেকেই করতে হবে। যাতে পুজোর সময় পদপৃষ্ট হওয়ার ঘটনা না হয়, তা দেখতে হবে। যার যা কিছু থিম করার অধিকার আছে। কিন্তু এমন কিছু আমরা করব না, যাতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুজো কমিটিগুলিকেই দায়িত্ব নিতে হবে।“ মমতার কথায়, “পুজো আসছে, অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে দেখে নিতে হবে। পুজো কমিটিগুলোর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ডিএম, এসপি এলাকা ভিজিট করুন। ভিজিট করে দেখুন, কার কী সমস্যা রয়েছে। আগে যেমন আমরা করতাম, আইসি-দেরও বলব, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি ভিজিট করুন। যেখান থেকে মিড ডে মিল দেওয়া হয়, সেই সব জায়গায় শিক্ষা দফতরের তরফেও নজরদারি করুন।“ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক জেলাশাসক-পুলিশ সুপারদের মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “কোনও স্তরে স্থানীয় সমস্যা থাকলে, মিটিয়ে ফেলুন। আর যদি মনে হয়, আপনার দ্বারা হচ্ছে না, তা হলে মুখ্যসচিবকে জানান। সাধ্যমতো কাজ করুন। আমার সঙ্গে কথা বলার থাকলে কথা বলুন।“