প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) কড়া বার্তা পেয়ে রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রেফারের প্রবণতা রুখতে এবারে শক্ত হাতে লাগাম ধরা শুরু হয়েছে। একশ্রেণির চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে এখন ত্রাহি ত্রাহি রব। রোস্টার মেনে না চলা এবং কর্তব্যে গাফিলতি যে আর আদৌ বরদাস্ত করবে না রাজ্য, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। রেফার রোগ রুখতে ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে কড়া সরকারি নির্দেশিকা। রেফার রোগ বেড়েছে রাজ্যে। সমস্ত সীমা ছাড়িয়েছে। এক শ্রেণির চিকিৎসক হাসপাতালকে উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত কাজ করছেন। ফলে চিকিৎসকের অভাবে রেফার রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতির উপর লাগাম টানতে বদ্ধপরিকর। চিকিৎসকরা যাতে রোস্টার মেনে চলেন তার দায়িত্ব দেওয়া হল হাসপাতাল সুপারদের। অনিয়ম ধরা পড়লেই ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন – কিশমিশের প্রচারে এবার দুই নায়ক একসাথে, দেব ও প্রসেনজিৎ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) এই রেফার রোগে বিরক্ত। তাঁর নির্দেশে কড়া মনোভাব নিয়ে কাজে নেমেছে স্বাস্থ্যভবন। ইতিমধ্যে জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত বার্তা গিয়েছে। চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ হবে। নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে— রেফার একান্তই অবশ্যম্ভাবী হলে তার দায়িত্ব নিতে হবে সুপারকে। রোগীকে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরতে হলে তার দায় সুপারের। অনেক হাসপাতালে ইমার্জেন্সি থেকে রেফার করা হচ্ছে কোনও রেকর্ড না রেখে। ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা। মেডিক্যাল কলেজগুলিও একান্ত প্রয়োজন ছাড়া রেফার না করে।হাসপাতাল সুপার চিকিৎসকদের দৈনিক ডিটটি রোস্টার টাঙিয়ে দেবেন। লক্ষ্য রাখতে হবে রোগীর পরিবারও যেন তা দেখতে পান। রোস্টার উপেক্ষা করে গরহাজির হলে শোকজ করতে হবে। অনুমোদনহীন ছুটি মাসে ৭ দিনের বেশি নয়। বেশি হলে বেতন কাটা যাবে। অনুমোদন ছাড়া ছুটি মিলবে না। সুপার না থাকলে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাতে হবে।
হাসপাতালে লামা অর্থাৎ লিভিং এগেনস্ট মেডিক্যাল অ্যাডভাইস বেড়ে গিয়েছে। রোগীকে ভুল বুঝিয়ে বহু চিকিৎসক এই লামার আড়ালে নিজের নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছেন। সুপারদের নির্দেশ, কোন চিকিৎসক মাসে ক’টি লামা করছেন, তার তালিকা রাখতে হবে। রোগীকে কোন নার্সিংহোমে কোন ডাক্তারের অধীনে ভর্তি করা হল, সেই তথ্য রাখতে হবে ।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে রেফার ও লামা যথাক্রমে সাত শতাংশ ও তিন শতাংশের নিচে হওয়ার কথা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে তা অনেক বেশি। এই পরিস্থিতি বন্ধ করতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে ভর্তি না হতে পারার ঘটনা ঘটলেই কড়া পদক্ষেপ। প্রত্যেকটি হাসপাতাল এখন থেকে স্বাস্থ্য কর্তাদের স্ক্যানারে।