ঘাসেই আজ গুজরাট জয়ের ছক

স্পিন থেকে নাইটদের ১৮০ ডিগ্রি সরে আসার কারণ রশিদ খান। কেকেআর বুঝেছে টার্নার হলে দুনিয়ার সেরা লেগ স্পিনার বিপদে ফেলে দেবেন।

Must read

অলোক সরকার: কেকেআরের স্পিন বোলিং কোচ কার্ল ক্রো। খুব একটা পরিচিত মুখ নন সার্কিটে। ইংরেজ ভদ্রলোক রবিবাসরীয় বিকেলে ক্লাব হাউসের মিডিয়া সেন্টারে বসে বলেছিলেন, আমাদের দু’জন বিশ্বসেরা স্পিনার আছে। ওরা খুব ভাল বল করছে। পাওয়ার প্লে থেকে মিডল ওভার বা শেষের দিকে যখন খুশি ওদের দিয়ে বল করানো যাচ্ছে।
শুনে মনে হচ্ছিল এ তো সেই পুরনো চিত্রনাট্য। এরপর হোম অ্যাডভান্টেজ আসবে। কেকেআর এমন উইকেট চাইবে যেখানে নারিন-বরুণ বনবন করে বল ঘোরাবেন। কিন্তু গুজরাট ম্যাচ হচ্ছে হায়দরাবাদ ম্যাচের উইকেটে। যেখানে সিমারদের সুবিধা পাওয়ার কথা। কারণ, ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগেও উইকেটে হালকা সবুজ আস্তরণ। জানা গেল এই ঘাস নাকি থাকবে। হায়দরাবাদ ম্যাচে বৈভব তিন ও রাসেল দুই উইকেট নিয়েছিলেন এখানে।

আরও পড়ুন-পদ্মপাল ঘোঁট পাকানোর চেষ্টায়, সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু সতর্ক করছে

স্পিন থেকে নাইটদের ১৮০ ডিগ্রি সরে আসার কারণ রশিদ খান। কেকেআর বুঝেছে টার্নার হলে দুনিয়ার সেরা লেগ স্পিনার বিপদে ফেলে দেবেন। এমন উদাহরণ হাতের কাছে আছে। কয়েক মাস আগের নিউজিল্যান্ড সিরিজ ধরা যাক। ভারত টার্নার বানিয়েছিল। তখন কেউ ভাবেনি নিউজিল্যান্ড দলেও এক ঝাঁক স্পিনার আছে। স্যান্টনার, ফিলিপসরা পড়ে পাওয়া টার্নারকে কাজে লাগিয়ে সিরিজ ৩-০ করে দেন। নাইটরা রশিদ, ওয়াশিংটন সুন্দর, জয়ন্ত যাদবের সামনে তাই আর ঝুঁকি নিতে চায় না।
রবিবার গুজরাট সেভাবে প্র্যাকটিস করেনি। জনা কয়েক রিজার্ভ প্লেয়ার এসেছিলেন। সঙ্গে রশিদ খান। যিনি অনেকক্ষণ বল করলেন। আগের রাতে ম্যাচ খেলে আসার পর বাকি প্লেয়িং ইলেভেনের প্র্যাকটিসে নামা সম্ভব ছিল না। তবে তাদের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বিক্রম সোলাঙ্কি খুঁটিয়ে উইকেট দেখে গেলেন। সম্ভবত হোটেলে ফিরে রিপোর্ট দিতে হবে। কিন্তু এই ঘাস সিরাজের হাতে পড়লে বুমেরাং হবে না তো? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাদ পড়ার পর হায়দরাবাদি বিধ্বংসী মেজাজে রয়েছেন। প্রায় সব ম্যাচে নিজের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। আরও যেটা বলার, ইশান্ত শর্মাও কিন্তু ঘাস পেলে পুরনো মেজাজ দেখাচ্ছেন।
উইকেট নিয়ে সিএবি যতই উদাসীনতা দেখাক, আসলে তারাও চাপে। না হলে কর্তারা দফায় দফায় উইকেটের তদন্ত করে যাবেন কেন। ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় কেকেআর, গুজরাট সবাইকে উইকেট নিয়ে যা বোঝানোর বুঝিয়ে গেলেন। সন্ধ্যার পর যখন কেকেআরের নেট চলছে, তখন আবার সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এলেন উইকেট দেখতে। দীর্ঘ সময় কথা বললেন কিউরেটরের সঙ্গে। মাঠের বাইরে এসেও আলোচনা চলল। তবে সিএবি সভাপতির সঙ্গে কথা হল না কেকেআরের কারও। ব্যাপারটা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী মনে হল।
নাইটরা বিকেল পাঁচটা নাগাদ ইডেনে এসে নেটে ছিল প্রায় সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। এদিনও নেটে লম্বা সময় ব্যাট করলেন রোভমান পাওয়েল। সোমবার তাঁকে খেলানো হতে পারে। আরেকজনের নামও আলোচনায় আছে। তিনি গুরবাজ। মণীশ পাণ্ডেও প্রথম এগারোর খুব কাছে দাঁড়িয়ে। সেক্ষেত্রে ডি’কক, রামনদীপের উপর বাদের খাঁড়া নেমে আসতে পারে। স্পিন কোচ ক্রো অবশ্য বলে গেলেন, আমরা এখনও দল চূড়ান্ত করিনি।

আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে স্বীকারোক্তি পাক সরকারের, আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়নি কুলভূষণকে

পাঞ্জাবের কাছে লজ্জার হারের পর নাইটরা খুব চাপে। পরিস্থিতি এমন যে, বাকি সাত ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ জিততে হবে। সেদিক থেকে দেখলে এই ম্যাচ নাইটদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এদিন আবার পেসারদের বিশ্রামে রেখে প্র্যাকটিসে নেমেছিল কেকেআর। উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট। হর্ষিত, বৈভবদের তরতাজা অবস্থায় গুজরাট ম্যাচে নামানো। আসেননি রাহানে, রাসেলও। নাইটরা ইদানীং ম্যাচের আগের দিন প্র্যাকটিসের ব্যাপারটা অপশনাল রাখছে। চাইলে প্র্যাকটিস, না হলে নয়।
এই ম্যাচ একজনের কাছে খুব স্পেশাল। তিনি শুভমন গিল। নাইটদের সংসারে ছিলেন। কিন্তু কেকেআর তাঁকে নিলামে তুলে দিয়েছিল। শুভমন যা নিয়ে পরে এক অনুষ্ঠানে হতাশা জানিয়েছিলেন। সোমবার চেনা মাঠে গুজরাট অধিনায়ক কি এতদিনের হতাশা ঝেড়ে ফেলতে পারবেন? কিন্তু তাঁর ব্যাটেও খরা চলছে। ফলে ঝোড়ো বাটলারের উপর ভরসা ক্রমশ বাড়ছে।

Latest article