সন্তানের রকমফের মায়েদের হয়রানি

জন্মের পর যখন থেকে শিশু হাঁটতে-চলতে, কথা বলতে শুরু করে তখন থেকেই মায়েদের হয়রানির শুরু। বয়সের বিভিন্ন ধাপে সন্তানের রকমফের সামলাতে গিয়ে হিমশিম খান তাঁরা। কারণ সব বাচ্চা সমান হয় না। এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের বিভিন্ন মানসিক এবং বিকাশজনিত সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করলেন বিশেষজ্ঞরা। শুনলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

আগেকার দিনে বাড়ির ঠাকুমা, দিদিমা, জেঠিমারা বাড়িতে বা পাশের বাড়িতে সদ্য মা হয়েছেন যাঁরা তাঁদের একটা কথা খুব বলতেন— ‘বাচ্চা যতদিন কাঁথায়, কাপড়ে থাকে ততদিনই ভাল।’ খুব ঠিক কথা এটা। এমনটা তাঁরা বলতেন কারণ জন্মের পর শিশুর শুধু দুটো কাজ থাকে, খাওয়া আর ঘুম। এই সময় বাচ্চার দেখভাল মানে মায়েরও প্রধান তিনটে কাজ— ফিড করানো, ঘুম পাড়ানো আর সময়মতো ভ্যাকসিন দেওয়ানো। চাপটা শুরু হয় এর পরবর্তী পর্যায় থেকে অর্থাৎ যখন সে হাঁটাচলা এবং কথা বলার স্তরে পৌঁছয়। মোটামুটি একবছর থেকে শিশুর হাঁটাচলা, কথাবলা শুরু হয়। এই সময় সন্তানকে ধাপে ধাপে বেড়ে উঠতে দেখার আনন্দের পাশাপাশি শুরু হয় প্রবল হয়রানিও। কারণ এই বয়স থেকেই শিশুর মধ্যে আচরণগত রকমফের আসতে শুরু করে। বিশেষ করে একবছর থেকে পাঁচবছরের শিশুর মধ্যে এমন অনেক নতুন আচরণ দেখা যায় যা হয়তো বাবা-মার কাছে একেবারে অচেনা, অজানা। ফলে তাঁরা বুঝতে পারেন না যে কী করবেন, পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবেন। কোনও বাচ্চা খুব বেশি চুপচাপ হয়ে যায়, কথা বলে না তো কোনও বাচ্চা স্কুলে যেতে চায় না। কেউ খুব জেদি হয় তো কেউ অস্থির, ঘ্যানঘেনে। বিশেষজ্ঞের মতে বাচ্চাদের এই যে আচরণগত পরিবর্তন এর নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। তাই জরুরি হল সেই কারণগুলো জেনে তার সমাধান করা। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। কারণ যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে সেই সমস্যার শিকড়ে পৌঁছনো দরকার। এক থেকে পাঁচবছর বা ছবকরের শিশুর বিভিন্ন মানসিক ও বিকাশজনিত পরিবর্তন, সমস্যা নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা তা হলে জেনে নেওয়া যাক।

আরও পড়ুন-বিজেপির ভুতুড়ে ভোটারে বিরক্ত ভূতেরাও, সামনে আসছে আরও ঘটনা

পায়েল ঘোষ
পেরেন্টিং কনসালটেন্ট
বাচ্চা যখন ঘ্যানঘেনে
একবছর বয়স থেকে বাচ্চা সাধারণত হাঁটতে-চলতে শুরু করে। তখনই ওরা হঠাৎ করেই একটা স্বাধীনতা পায় এবং সবকিছুই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। ভীষণ ছোটাছুটি শুরু করে দেয়, চঞ্চল হয়ে ওঠে। হঠাৎ করেই শিশুর এই চঞ্চলতা অভিভাবকদের নিতে অসুবিধে হয়। অনেক সময় তাঁরা খুব ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং না বুঝে পরিস্থিতি সামলাতে বাচ্চাকে শান্ত করতে স্ক্রিন টাইম দিয়ে ফেলেন অর্থাৎ হাতে মোবাইল দিয়ে দেন বা টিভির সামনে বসিয়ে দেন দিনের অনেকটা সময়। তাতে সাময়িকভাবে তাকে শান্ত করা গেলেও ধীরে ধীরে তাঁদের ভোকাবুলারি নেবার ক্ষমতাটা কমে যায়। সারাক্ষণ স্ক্রিনে অ্যাকটিভিটি, কার্টুন দেখতে গিয়ে কথা শেখা বন্ধ হয়ে যায়। দেখা যায় বাচ্চা কথা বলছে না। এক থেকে দু’বছরের বাচ্চার ইশারায় কথা বলার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এবার হয়রানির বিষয় যেটা তা হল নিজেকে বোঝাতে না পেরে শিশুটি কথায় কথায় কাঁদে, ঘ্যানঘ্যান করে, জিনিস ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে। দুই থেকে আড়াই বছর বয়স পর্যন্ত এই অবস্থা আরও প্রকট হয়। বাচ্চা মনের ভাব ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। মা-বাবা এবং বাড়ির কেয়ার গিভাররা তাঁর ইশারার ভাষা বুঝতে পারে না। তাই বাচ্চা যদি চিৎকার করে কাঁদে, বিরক্ত হয়, ঘ্যানঘ্যান করে তাহলে বুঝতে হবে সে কমিউনিকেট করতে পারছে না তাই এমন আচরণ করছে।
অসম্ভব জেদি
একটা শিশুর জেদ তখনই হয় যখন সে পরিপার্শ্বকে বুঝতে পারে। যখন সে এটা বোঝে যে কী করলে বাড়ির লোক তার প্রতি মনোযোগী হবে বা অ্যাটেনশন দেবে তখন জেদ করে। সে বোঝে জেদ করলে বাড়ির লোক সেটা মেনে নেবে। দু’বছর থেকে তিন বছরের শিশুদের মধ্যে জেদ বেশি দেখা যায়। জেদি বাচ্চা কখনও শুয়ে গড়াগড়ি খায়, কখনও দেওয়ালে মাথা ঠোকে বা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, মুখ লাল করে ফেলে। কখনও প্রচণ্ড চিৎকার করে, কাঁদে, আঁচড়ে দেয়, কামড়ে দেয়, জিনিস ছোঁড়ে। আবার বাবা-মা ওয়র্কিং, দাদু-ঠাকুমা বা দিদা বা আয়ার কাছে বাচ্চা সারাদিন থাকে এমন পরিকাঠামো আজকাল বহু বাড়িতেই। ফলে বয়স্করা বাচ্চা সেই দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে পারেন না পাশাপাশি আয়া যিনি তিনিও বকঝকা করতে সাহস পান না এবং তাঁরা বাচ্চার বায়নাক্কা মেনে নেন। আর শিশুটি ওই সিস্টেমেই দিনে দিনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। এবার দিনের শেষে বাবা-মা এসে যখন কিছু শেখাতে যাচ্ছেন সে শিখছে তো নাই, উল্টে ফিউরিয়াস হয়ে যাচ্ছে, জেদ করছে এবং তা দিনে দিনে বাড়ছে। সেই জেদ সামলাতে বেশিরভাগ বাবা মা-ই শিশুটি যা চায় তাই দিয়ে দেন। ফলে তারা ঘরে বাইরে একইরকম আচরণ করে, বাবা-মার নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
বাচ্চা যখন অভব্য
বাচ্চা হয়তো কোথাও কোনও এমন ভাষা শুনেছে যেটা আমরা সচরাচর ব্যবহার করি না। হয়তো কিছু খারাপ শব্দ, গালিগালাজ তার কানে গেছে। কিছু কিছু কার্টুনেও খারাপ শব্দ থাকে যা বাচ্চারা চট করে ধরে ফেলে। এবার তাদের যত মানা করা হচ্ছে দেখা গেল তারা সেটাই বেশি করে বলছে। তার সঙ্গে কিছু অভব্য আচরণও তারা করছে যেমন লাথি দেখানো, থুতু দেওয়া ইত্যাদি। এটা নিয়ে বহু বাবা-মাকেই লোকসমাজে খুব বিব্রত হতে হয়।
সেপারেশন অ্যাংজাইটি
সেপারেশন অ্যাংজাইটি হলে বাচ্চা সবসময় কাউকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়, বিশেষত মাকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকার কথা ভাবতে পারে না। স্কুলে যেতে চায় না। স্কুলের গেটের সামনে গিয়ে দিনের পর দিন বাড়ি ফিরে আসে। জোর করলে কাঁদে, মাটিতে শুয়ে পড়ে। এই সমস্যা বহুদিন ধরে চলে। সেপারেশন অ্যাংজাইটি খুব কমন একটা সমস্যা দু’বছর থেকে তিন বছরের বাচ্চাদের। এমনকী একা খেলাধুলোও তারা করতে পারে না। মা বাথরুম গেলে সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মায়ের থেকে দূরে গেলে ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়।
আরও কিছু সমস্যা
বাচ্চা মোটামুটি চার-পাঁচবছর হলে শেয়ারিং ইস্যু তৈরি হয়। কারও সঙ্গে কিছু ভাগ করে নিতে চায় না। কিছু বাচ্চা ঠিকমতো আই কনট্যাক্টও করতে পারে না। এদের স্কুলে ইন্টারভিউ দিতে নিয়ে গেলে মা-বাবার হয়রানির শেষ থাকে না। স্লিপ সাইকেল ডিজর্ডার হয়। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে সকালে উঠতে পারে না। খাওয়া নিয়েও একটা বড় সমস্যা থাকে, একদম খেতে চায় না বা অনেকক্ষণ ধরে খাবার মুখে নিয়ে বসেই আছে।
সমাধান
পুরোদস্তুর ভাবে দিনের কোনও একটা সময় শিশুকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যেতে হবে। অন্তত ৯০ মিনিট তাকে আউটডোরে রাখতেই হবে। সেখানে তাকে খেলানো, দৌড় করানো এগুলো করতে হবে। বাইরের আলো-হাওয়া লোকজন না দেখালে সে কখনওই স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে না।
স্ক্রিন টাইম সারাদিনে কুড়ি মিনিট করে দু’বার বারো ঘণ্টার গ্যাপে তার বেশি এতটুকু নয়। এরমধ্যে বড় টিভিটাই বেশি থাকবে মোবাইল নয়। এর ফলে বাচ্চার সঙ্গে মা-বাবা ইন্টারাক্টিভ হতে পারবে। খুব স্পিডি কার্টুন তাদের না দেখানো ভাল।
জেদি বাচ্চার ক্ষেত্রে টাইম আউট থেরাপি খুব কার্যকরী। ধরে নেওয়া যাক কোনও বাচ্চা খুব জেদ করছে। সেক্ষেত্রে বাবা-মা হন বা স্কুলের শিক্ষক প্রথম শর্ত হবে শান্ত না হলে তার কোনও কথা শোনাই হবে না এটা বুঝিয়ে দেওয়া। না মানে না-ই। একরোখাভাবে কিছু করে যাচ্ছে তাকে বারবার প্রতিহত করতে হবে। স্কুলের ক্ষেত্রে ক্লাসরুমের বাইরে বাচ্চাকে দূরে ফাঁকা কোনও জায়গায় দাঁড় করাতে হবে যতক্ষণ না সে জেদ কমিয়ে শান্ত হচ্ছে ততক্ষণ বাবা-মা হন বা শিক্ষক ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে। অপেক্ষা করতে শেখাতে হবে। জেদ করলেও তার কথা তখনই মেনে নেওয়া যাবে না।
যে বাচ্চারা কথা বলে না, গুটিয়ে থাকে কোথাও যেতে চায় না তাদের ক্ষেত্রে বাড়িতেই তার চেনা মানুষ বা বন্ধুদের নিয়ে আসতে হবে। এটা দু-তিনবার করার পর ওর বন্ডিং তৈরি হবে। এবার ওকে অল্প সময়ের জন্য বন্ধুর বাড়ি পাঠাতে হবে।
স্কুলে যেতে না চাইলেও জোর করে ওখানেই রেখে আসতে হবে। বাচ্চা যখন বুঝবে রোজ বাবা-মা সময়মতো চলে আসে তাকে নিতে তখন ওর মধ্যে বিশ্বাস গড়ে উঠবে এবং ধীরে ধীরে স্কুলে থাকতে শিখবে।
খারাপ ভাষা ব্যবহার বা কদর্য আচরণ করলে বাচ্চার ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স। সেদিনের জন্য বাচ্চার সব আনন্দ বন্ধ করে দিতে হবে।
বাচ্চাকে এক জায়গায় বসিয়ে খাওয়াতে হবে। একেবারেই ঘুরে ঘুরে খাওয়ানো নয় এবং খাওয়াতে খুব বেশি সময় দেওয়া যাবে না।
তিনবছর পর্যন্ত বাচ্চার রাতে আট ঘণ্টা ঘুম এবং দুপুরে দেড় ঘণ্টার ন্যাপ জরুরি। যাদের এমনটা নেই তাদের এই সময় মেনে স্লিপ সাইকেল রেগুলার করতে হবে।

আরও পড়ুন-হবু মায়ের সুস্থতা এবং সংস্কার

ডাঃ জয়রঞ্জন রাম
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

বিকাশের সমস্যা
শূন্য থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের মধ্যে বিকাশের সমস্যা হয় যাকে বলে প্রতিবন্ধকতা বা ডিজএবিলিটিজ। বাচ্চার কথা না বলা, হাঁটতে না পারা, লোক চেনা ইত্যাদির বিকাশ পিছিয়ে থাকে, হয় না। এগুলোর মধ্যে সেরিব্রল পলসি, অটিজম, কথা দেরি করে হয় যাকে আমরা ইন্টেলেকচুয়াল ডিজএবিলিটি বলি, মেন্টাল রিটার্ডেশন ইত্যাদি সবই পড়ে।
বাচ্চা যখন হাইপারঅ্যাক্টিভ
মূলত এক কী দু’বছর থেকে পাঁচবছর বয়ঃসীমা সবচেয়ে বড় যে সমস্যায় মায়েরা হিমশিম খান তা হল এডিএইচডি। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে অ্যাটেশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজর্ডার। পাঁচবছর থেকে বাচ্চার মধ্যে এটা প্রকট হয়। বাচ্চা
প্রচণ্ড অমনোযোগী, অস্থির, অধৈর্য হয়। তাদের সমবয়সি অন্য বাচ্চাদের তুলনায় অতিরিক্ত দুরন্ত হয়। সারাক্ষণ ছুটে বেড়ায়, কথা শোনে না, এক জায়গায় একমুহূর্ত বসে না। এইমাত্র এটা চাই তো তার পরের মুহূর্তে অন্যটা। ফলে এই বাচ্চাদের ম্যানেজ করতে বাবা-মায়েদের হিমশিম খেতে হয়। এই ধরনের বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে থেকেও কমপ্লেন আসতে থাকে। ধরা যাক, শিক্ষক কোনও প্রশ্ন করল। শেষ হবার আগেই সেই বাচ্চাটি উত্তর দিয়ে বসল। বোর্ডে কী করানো হচ্ছে সেদিকে মন না দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে রইল। এক জায়গায় তাকে বসানোই গেল না। অনেক বাচ্চাই এদের সঙ্গে মিশতে চায় না কারণ এরা অন্য বাচ্চাদের প্রচণ্ড ডমিনেট করে। স্কুলও এমন বাচ্চাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ফলে বাবা-মাকে তারা কমপ্লেন করতে থাকে।
বাচ্চার এই সমস্যার নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বের করা যায়নি তবে জিনের একটা ভূমিকা রয়েছে। বাবা-মা যদি দুরন্ত হয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় কেউ যদি মদ্যপান, ধূমপান করেন বা মা যদি আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপে ভোগেন তাঁদের সন্তানদের এডিএইচডি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া আরও বেশকিছু কারণ রয়েছে।
এই সমস্যার সমাধান বিহেভিয়ার থেরাপি। ছোট বয়সে এছাড়া আর কোনও পদ্ধতি নেই। বাচ্চা একটু বড় হলে মেডিকেশন দেওয়া হয় অনেক সময়। সবার আগে বাবা-মাকে বুঝতে হবে এটা একটা অসুখ। বাচ্চা ইচ্ছে করে দুরন্তপনা করছে না বা অমনোযোগী হচ্ছে না। তাকে পড়াশুনোর এমন পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে যেখানে তার মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে না। তাকে ছোট ছোট টাস্ক দিতে হবে, বড় নয়। সে কোনও ভাল কাজ করলে প্রশংসা করতে হবে প্রয়োজনে পুরস্কৃত করতে হবে। বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।
চাইল্ডহুড ডিপ্রেশন
যদি দেখা যায় এই বয়সের কোনও বাচ্চার মা অসুস্থ। তিনি তাঁর সন্তানের ঠিকমতো যত্ন নিতে পারছেন না বা বাড়িতে পারিবারিক অশান্তি, দাম্পত্যকলহ রয়েছে,বাড়ির কেউ নেশাগ্রস্ত অর্থাৎ বাড়ির পরিবেশ ভাল না তাহলে সেটা থেকে বাচ্চার মধ্যে একটা হতাশা, ডিপ্রেশন আসে। সেটা হয়তো তারা ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না কিন্তু ঝিমিয়ে পড়ে, ঘ্যানঘ্যানে হয়ে যায়। যা শিখেছিল তা প্রয়োগ করতে ভুলে যায়। এমন বাচ্চা হয়তো বিছানাতেই ইউরিন করে ফেলছে অথচ সে জানে বাথরুমে যেতে হয়। সে খেলায় আগ্রহ পায় না। খিদে চলে যায়, মনমরা হয়ে থাকে। এটা চাইল্ডহুড ডিপ্রেশন। এই সমস্যা পাঁচবছরের বাচ্চাদের মধ্যেই দেখা যায় তবে কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়। বহু বাবা-মা বুঝতেই পারে না, তারা ভাবে কী হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি।

Latest article