নয়াদিল্লি : নামেই সরকারি পরীক্ষা! অথচ প্রশ্নপত্রে শাসকদলের নেতাদের নাম, পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের এই কীর্তিতে নিন্দার ঝড় সর্বত্র। হরিয়ানার পুলিশ ইন্সপেক্টর নির্বাচনের পরীক্ষায় রাজ্যের বিজেপি সরকারের চরম পক্ষপাতদুষ্ট ‘রাজনৈতিক’ আচরণের সাক্ষী পরীক্ষার্থীরাও। সরকারি পরীক্ষা নাকি বিজেপি দফতরে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা, তা বোঝা দুষ্কর। প্রশ্নপত্রের নমুনা সামনে আসতেই বিতর্ক তুঙ্গে। চাপের মুখে হরিয়ানা স্টাফ সিলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যানও ঘটনার দায় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন-দিনভর চড়া নাটক, রাতে ‘খুনি’ আশিসকে গ্রেফতার
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পুলিশ ইন্সপেক্টর নির্বাচনের পরীক্ষা ছিল হরিয়ানায়। সেখানেই এমন কিছু প্রশ্ন এসেছে যা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। যেমন: ১) ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা ও হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কী? ২) উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের এমন এক মন্ত্রীর নাম বলুন যাঁর সঙ্গে হরিয়ানার সম্পর্ক রয়েছে। ৩) হরিয়ানার সেই বিজেপি সাংসদের নাম বলুন যাঁর বাবা সম্প্রতি মারা গিয়েছেন? ৪) বরোদা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রতীকে কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন? ৫) বিজেপির হরিয়ানার রাজ্য সভাপতি কে? ৬) হরিয়ানার অর্থমন্ত্রী এবং পর্যটনমন্ত্রীর নাম বলুন। ৭) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি কে?
বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় ৪৬৩টি পুলিশ পদের জন্য পরীক্ষা দিতে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের এমনই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এক লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। দুটি পেপারে মোট ১০০টি প্রশ্নের বেশিরভাগই ছিল কোনও না কোনও ভাবে বিজেপি এবং বলিউড সম্পর্কিত। হাস্যকর প্রশ্নের একটি নমুনা : প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, পরিণীতি চোপড়া, মল্লিকা শেরাওয়াত ও মাধুরী দীক্ষিতের মধ্যে কে ছ’বছর আগে নরেন্দ্র মোদির ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ প্রচারে উপস্থিত ছিলেন? প্রশাসনিক স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বিজেপি শাসিত সরকারের এই কাণ্ডকারখানার পর প্রশ্ন উঠছে, শাসনভার যাঁদের হাতে তাঁরা কীভাবে মগজধোলাই করতে চলেছেন?
আরও পড়ুন-শরতে আজ কোন অতিথি এল প্রাণের দ্বারে
স্টাফ সিলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান গোপাল সিং কাদরি এই ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়ে বলেন, এই রকম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে এধরনের প্রশ্ন সত্যিই অপ্রাসঙ্গিক। পরবর্তী সময় আমরা সতর্ক থাকব। যদিও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এই পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠেছে। রাজনৈতিক মহলও হরিয়ানার খাট্টার সরকারের কার্যকলাপের তীব্র বিরোধিতা করে পরীক্ষা বাতিল চাইছে।