প্রতিবেদন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ট্রাম্পের জয় মহাসমস্যায় ফেলেছে ডেমোক্র্যাটদের ঘোষিত বন্ধু ইউনুসকে। আমেরিকার সাধারণ নির্বাচন যেভাবে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ বাংলাদেশের রাজনীতিকে আলোড়িত করছে তা নজর রাখছে ভারতের কূটনৈতিক মহলও। বিশেষত হিংসাত্মক কোটাবিরোধী আন্দোলনের অভিঘাতে দেশছাড়া শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার বার্তা দিয়ে ভারতে চলে আসার পরও যেভাবে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ পরিচয় নিয়ে সদ্যনির্বাচিত ট্রাম্পকে (Donald Trump) ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাতে আলোড়িত ওপারের রাজনৈতিক মহল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কট্টর ট্রাম্পবিরোধী হিসাবে পরিচিত মহম্মদ ইউনুস ভবিষ্যতে মার্কিন প্রশাসনের মদত আদৌ পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে ডেমোক্র্যাটিক বাইডেনের জমানায় হাসিনাকে কোণঠাসা করতে যে কৌশল ব্যবহার করেছিল মার্কিন প্রশাসন তা যদি ট্রাম্পের জমানায় ‘অনির্বাচিত’ অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপাতে চান ট্রাম্প, তাহলে মহাবিপদে পড়বেন ইউনুস।
আরও পড়ুন- কোয়েটা স্টেশনে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ: হত একাধিক সেনা-সহ ২৮, জখম বহু
ইতিমধ্যেই হাসিনার দলের দুটি পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছে বাংলাদেশে। প্রথমত, ট্রাম্পের (Donald Trump) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পরিচয়েই সরাসরি ফোনে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে ট্রাম্পকে জয়ের জন্য অভিনন্দনের চিঠিতেও হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেছে আওয়ামি লিগ। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মন্তব্য করেছিলেন, হাসিনার পদত্যাগপত্র তিনি পাননি। এই কথায় প্রবল জলঘোলা হয় এবং রাষ্ট্রপতিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষুব্ধ অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পদাধিকারীরা। কিন্তু আমেরিকার পালাবদলের পর এমন ঝুঁকি ইউনুস নেবেন না বলেই মনে করে সেদেশের রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ। অনেকেই বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস আশঙ্কিত যে, ট্রাম্পের মদতে তাহলে কি বাংলাদেশে ফিরে আবার প্রধানমন্ত্রীর মসনদেই বসতে চলেছেন হাসিনা? হাসিনার সরকারকেই কি বৈধ বলে স্বীকৃতি দেবে ট্রাম্প প্রশাসন? মাঝরাতে নিজের অফিসে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ইউনুসের বৈঠক অন্তর্বর্তী সরকারের আশঙ্কাকেই স্পষ্ট করছে। যদি তাঁর আশঙ্কা সত্যি হয়, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টারা।
ইউনুসের ঘাবড়ে যাওয়ার কারণ আসলে হাসিনার পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে পাঠানো অভিনন্দনবার্তা সম্বলিত আওয়ামি লিগের চিঠি। হাসিনার অভিনন্দনবার্তায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আওয়ামি লিগ। যার মোদ্দা কথা, বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের সভাপতি (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা আমেরিকার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রথমবার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় ট্রাম্প এবং তাঁর স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর বৈঠক এবং কথোপকথন স্মরণ করেছেন। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার পক্ষে সওয়াল করে ভবিষ্যতে আবার ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন হাসিনা। আর এতেই তোলপাড় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল। ঘাবড়ে গিয়েছেন স্বয়ং ইউনুস।