ইন্দোর, ১৯ অক্টোবর: সেই তীরে এসে তরী ডুবল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরও একটি ম্যাচ নাগালের মধ্যে রেখেও মাঠে ফেলে এলেন হরমনপ্রীত কৌররা। ২০১৭ বিশ্বকাপের ফাইনাল ধরলে তালিকাটা দীর্ঘ। ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারলে সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরির কোনও মূল্য থাকে না। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় দলগুলির বিরুদ্ধে এই জায়গাতেই নিখুঁত হতে পারছে না ভারতের মেয়েরা। ফলে স্মৃতি মান্ধানা, হরমনপ্রীত, দীপ্তি শর্মারা লড়াকু ইনিংস খেললেও তা কাজে এল না। ইন্দোরে মেয়েদের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র ৪ রানে হারল ভারত। হারের হ্যাটট্রিকে হরমনপ্রীতদের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা বড় ধাক্কা খেল। ইংল্যান্ড (৯ পয়েন্ট) টানা চতুর্থ জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল। সেঞ্চুরি করে ম্যাচের সেরা ইংলিশ ব্যাটার হিদার নাইট। ৫ ম্যাচে ভারতের পয়েন্ট ৪। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাগ্য নির্ধারণ হরমনদের। শেষ দুই ম্যাচ শুধু জিতলেই হবে না, নেট রান রেট ও অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে ভারতকে।
ইংল্যান্ডের ২৮৮ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। প্রতীকা রাওয়াল (৬) ও হরলিন দেওল দ্রুত আউট হন। এরপর দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার স্মৃতি ও অধিনায়ক হরমনপ্রীত ভারতকে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অনেকদিন পর চেনা ছন্দে দেখা যায় হরমনকে। দু’জনের ১২৫ রানের জুটি ভাঙে ৩১তম ওভারে। শিভার ব্রান্টের বলে আউট হন ভারত অধিনায়ক। ১০০ স্ট্রাইক রেটে ৭০ রান করে ফেরেন হরমন। দীপ্তি যোগ দেন স্মৃতির সঙ্গে। দু’জনে দ্রুতগতিতে রান তুলে ভারতের জয়ের রাস্তা মসৃণ করছিলেন। কিন্তু ৪২তম ওভারে স্মৃতি (৮৮) আউট হতেই ভারতের হারাকিরি ব্যাটিং শুরু। দীপ্তির সঙ্গে জুটি বেঁধে রিচা ঘোষও (৮) পারেননি দলকে জেতাতে। হাফ সেঞ্চুরি করে দীপ্তি (৫০) ফেরার পর ম্যাচ ভারতের হাতের বাইরে চলে যায়।
আরও পড়ুন-আলোর উৎসব
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে অতিরিক্ত একজন বোলার খেলিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি। প্রথমে ব্যাট করে প্রায় তিনশোর কাছে রান তুলে দেয় ইংল্যান্ড। ছন্দে না থাকা ব্যাটার জেমাইমা রডরিগেজের জায়গায় পেসার রেণুকা সিংকে খেলায় ভারত। কিন্তু অনেকদিন পর প্রথম এগারোয় ফিরে দাগ কাটতে পারেননি রেণুকা। প্রথমে ব্যাট করে ট্যামি বিউমন্ট (২২) এবং অ্যামি জোনসের (৫৬) ওপেনিং জুটিতে ৭৩ রান তুলে ফেলে ভাল শুরু করে ইংল্যান্ড। দু’জনকেই ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফেরান দীপ্তি। এরপর ইংল্যান্ডের দুই সেরা ব্যাটার নাইট এবং ন্যাট শিভার ব্রান্টকে আটকাতে নাজেহাল হতে হয় ভারতীয় বোলারদের। নাইট বেশি আগ্রাসী ছিলেন। দু’জনের ১১৩ রানের জুটি ভাঙে ৩৯তম ওভারে। বাঁ-হাতি স্পিনার শ্রী চরনী আউট করেন শিভার-ব্রান্টকে (৩৮)। তবে নাইটকে থামানো যায়নি। সেঞ্চুরি করার পর ৪৫ ওভারের মাথায় রান আউট হন তিনি। বিশ্বকাপে এটি তাঁর তৃতীয় সেঞ্চুরি। শেষদিকে দীপ্তি, শ্রী চরনীর ঘূর্ণিতে পরপর উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। দীপ্তি আরও দু’টি উইকেট নেন। ৪ উইকেট তাঁর ঝুলিতে। একটা সময় সাড়ে তিনশোর কাছে ইংল্যান্ডের রান পৌঁছে যাবে মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত দীপ্তিদের দাপটে ইংল্যান্ড থামে ২৮৮-৮ স্কোরে।