মানস দাস, মালদহ : তিনি নিজে একজন সেনাকর্মী। চান আরও সেনা তৈরি করতে। তাই এলাকার ছেলেমেয়েদের সেনা তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন চাঁচলের সাজ্জাদ আলি। প্রায় দু’বছর ধরে চলছে তাঁর ট্রেনিং ক্লাস। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এই মুহূর্তে সেখানে ট্রেনিং নিচ্ছেন এলাকার প্রায় দেড়শো জন। তার মধ্যে রয়েছেন পাঁচটি মেয়েও।
সাজ্জাদ আলি ভারতীয় সেনার একজন কম্যান্ডো। প্রতিদিন ভোর পাঁচটা থেকে চাঁচল হাটে শুরু হয় তাঁর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ক্লাস। প্রায় চার ঘণ্টা ক্লাস চলে। বছর দুয়েক আগে হাতে গোনা ৫-৬টি ছেলেমেয়ে সেই ক্লাসে যোগ দিয়েছিলেন। এখন সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো। শুধু ছেলে নয় রয়েছেন
আরও পড়ুন : আশাকর্মীদের বাড়তি ভাতা
মেয়েও। সাজ্জাদ আলি বলেন, “খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি। তারপর সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছি। আমার কোনও ট্রেনিং ছিল না। অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এখনও দেখি অনেকে ফিজিক্যাল টেস্টে উত্তীর্ণ হতে না পেরে ফিরে আসে। আমি চাই ট্রেনিং দিয়ে দেশের জওয়ান তৈরি করতে।” তিনি মুম্বইয়ে কর্মরত। তিনি না থাকলে তাঁর বন্ধু রবিউল হাসান, নাওয়াজ আর দিলওয়ার হোসেন ট্রেনিং দেন। বছর দেড়েক ধরে এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন নার্গিস পারভিন। স্কুলজীবনে অ্যাথলেটিকে রাজ্যস্তরে ভাল ফল করেছেন। সদ্য স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছেন। সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়ে সেনায় চাকরি করবে, তা প্রথমে মেনে নিতে পারেননি অভিভাবকরা। ধীরে ধীরে তাঁদের ভরসা জুগিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকেই সেনায় চাকরি করার স্বপ্ন। দেশের সুরক্ষায় নিজেকে নিয়োগ করার স্বপ্ন চোখেই বড় হয়েছি। সাজ্জাদ স্যার আছেন আমি পারবই।” ঘরের অন্দরে বন্দি থাকা মেয়েদের সামনে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতেরও স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সাজ্জাদ। লেখাপড়া শেষ করে জীবনে দাঁড়ানোর রাস্তা তৈরি করে দিচ্ছেন তিনি। স্বভাবতই খুশি এইসব ছেলেমেয়েরা।