প্রতিবেদন : বড় বিপর্যয়ের মুখে উত্তরের পার্বত্য এলাকা। সারারাত লাগাতার বৃষ্টির (Rain) কারণে ফুলে-ফেঁপে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা-সহ একাধিক নদী। তিস্তা বাজার এলাকায় কালিম্পং থেকে জোড়বাংলো হয়ে লামাহাটা হুম ও দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তার উপর দিয়ে বইছে জল। এক কথায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ের মধ্যে। অন্যদিকে, কালিম্পংয়ের দশ নম্বর জাতীয় সড়কে ২১ মাইল এলাকায় নতুন করে ধ্বসে গিয়েছে ২১ নম্বর জাতীয় সড়ক। এছাড়াও নতুন করে ধস হয়েছে সেলফি দাঁড়া এলাকায়। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে তিস্তা বাজার এলাকার সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার রাতে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ার কারণে তিস্তার জল বেড়ে গিয়েছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে সিকিম যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরিভাবেই বন্ধ রয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, কাঁচামাল-সহ ছোটগাড়িগুলি সেবক হয়ে ডুয়ার্সের গরুবাথান হয়ে লাভা-লোলেগাঁও দিয়ে সিকিম যাচ্ছে। একদিকে, যেমন নতুন করে ধসে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক তেমনি পাহাড় কেটে নতুন করে রাস্তা বানানোর চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। ২১ মাইলে ধস নামার পরেই প্রশাসনিক উদ্যোগে ধ্বস পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। ধসের কারণে প্রচুর ছোট গাড়ির আটকে পড়েছে। প্রশাসনিক উদ্যোগে জেসিবি দিয়ে ধস পরিষ্কার করে কোনওভাবেই ছোট গাড়িগুলিকে যাতায়াতের ব্যবস্থা করছে। সবথেকে বেশি বিপদের মুখে পড়েছে সিকিম রাজ্যের সাধারণ মানুষরা। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য থেকে যে কোনও সরঞ্জামই শিলিগুড়ি থেকে সিকিমে যায়। রাস্তার এমন পরিস্থিতির কারণে সিকিম সরকার কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ দপ্তরের কাছে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। একইসঙ্গে জলপাইগুড়ির মাল ব্লকের বাগড়াকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের টোটগাঁও তিস্তার গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। শুরুর দিন থেকেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন, ব্লক প্রশাসন গোটা এলাকার জলমগ্ন পরিস্থিতি থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্যে স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুল টোটগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প করে। কিন্তু বর্তমানে তিস্তা তার ভয়াল রূপ বাড়িয়ে গোটা গ্রামের সমস্ত কিছুই শেষ করে দিয়েছে। তাই প্রশাসনের নির্দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে এনে প্রত্যেককে বাড়িতে নিরাপদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবং সেখানেই গত তিন দিন ধরে তাঁদের খাবার, থাকার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।