প্রতিবেদন: খালিস্তানপন্থীদের লাগাতার হুমকি এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পরিকল্পিত প্ররোচনায় ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুতর অবনতি হয়েছে। দু’দেশই অন্য পক্ষের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মাকে। কিছুদিন আগে তাঁর বিরুদ্ধেও নিজ্জর হত্যার দায় চাপিয়েছিল কানাডা। এবার দেশে ফিরে কানাডায় ছড়িয়ে পড়া খালিস্তানি নেটওয়ার্ক নিয়ে বিস্ফোরক পর্দাফাঁস করলেন সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সঞ্জয়।
আরও পড়ুন-তিরুপতির একাধিক হোটেলে বোমাতঙ্ক, পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থার হাত?
গত কয়েক মাস ধরেই ভারত-কানাডা সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জাস্টিন ট্রুডোর প্রশ্রয়ে সেদেশে খালিস্তানিদের বাড়বাড়ন্তই সম্পর্কে চিড় ধরার অন্যতম কারণ। নিজের গদি বাঁচাতে রাজনৈতিক কারণেই ভারত বিরোধী খালিস্তানপন্থীদের সমর্থন করছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। এজন্য তাঁর নিজের দলেই প্রশ্নবিদ্ধ তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে ট্রুডোর বিস্ফোরক অভিযোগ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় অন্তরায় হয়ে উঠেছে। কানাডার মাটিতে খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের দায় উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই ভারতের ঘাড়ে চাপিয়েছেন ট্রুডো। এসবের মাঝেই কানাডায় ক্রমবর্ধমান খালিস্তানি নেটওয়ার্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন সেদেশ থেকে ফিরে আসা ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা। তিনি জানান, ভারত থেকে যে পড়ুয়ারা কানাডায় যান, তাঁদের মগজধোলাই করে দলে টানার চেষ্টা করে খালিস্তানিরা। কানাডায় সন্তানদের পড়াশোনা করতে পাঠানো ভারতীয় অভিভাবকদের উদ্দেশে সঞ্জয় ভার্মা বলেছেন, নিয়মিত নিজের সন্তানের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের আশপাশে কী চলছে, তা বোঝার চেষ্টা করবেন। খালিস্তানি জঙ্গিরা খাবার, বাসস্থানের লোভ দেখিয়ে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিজেদের দলে টানে। এরপর তাদের ভারত বিরোধিতার কাজে লাগাতে মগজধোলাই করা হয়। ভার্মা বলেন, ‘মগজধোলাই’ হওয়া পড়ুয়াদের নিয়ে গিয়েই কানাডার ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে শামিল করানো হয়। তাদের দিয়ে জোর করে সেইসব প্রতিবাদের ছবি তুলিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভারতীয় পতাকার অবমাননা করানো হয় ভারতীয় পড়ুয়াদের ব্যবহার করে। সেইসব ঘটনার ভিডিও করানো হয়। এরপর ভয় দেখিয়ে বলা হয়, ভারতে ফিরে গেলে শাস্তি পেতে হবে। তাই কানাডা সরকারের থেকে আশ্রয় চাইতে বাধ্য করা হয় সেই সব পড়ুয়াদের।
দিনকয়েক আগে কানাডার তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের মামলায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা ‘স্বার্থ সম্পর্কিত ব্যক্তি’। কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। তার পরেই কানাডা সরকারের নিশানায় থাকা ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় ভার্মা ও অন্যান্য কূটনীতিকদের দেশে ফেরার নির্দেশ দেয় ভারত।