তন্ত্রসাধনায় নরবলির অভিযোগে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত দুই অভিযুক্ত ফাঁসির সাজা বাতিল করে বেকসুর খালাস পেলেন। কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata Highcourt) দুজনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত সূত্রে খবর, প্রায় সাত বছর আগে হুগলির খানাকুলে এক দম্পতির বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে বলি দেওয়া এবং ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাগরিকা পণ্ডিতকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। নাবালিকার দিদাকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে এবার এই দুই অভিযুক্তের সাজা মকুব করে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন-ভোটে হেরে বিদ্বেষের ষড়যন্ত্র, জবাব দেবে বাংলা
২০১৮ সালে এই শিশুর দিদিমার বিরুদ্ধে খানাকুলে তন্ত্রসাধনার জন্য নাতনিকে তান্ত্রিকের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর কিছুদিন পর এক প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ওই শিশুর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিতের বিরুদ্ধে শিশুটিকে ধর্ষণের পরে খুন করার অভিযোগ আনা হয়। স্ত্রী সাগরিকার উপরেও অভিযোগ আনা হয়। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই মুরারি, সাগরিকা ও নাবালিকার দিদিমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বিচার চলাকালীন মূল অভিযুক্ত মুরারির মৃত্যু হয়। বাকি দু’জনের মধ্যে তান্ত্রিকের স্ত্রীকে ফাঁসির সাজা দেয় আরামবাগ আদালত। মৃতের দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-একুশতম ইলিশ উৎসব কাঁকুড়গাছিতে, খাদ্যাভ্যাসে জবরদস্তি মানবে না বাংলা-বাঙালি
সাগরিকার আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ঘোষ এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান প্রথমত ধর্ষণের অভিযোগ মহিলার বিরুদ্ধে আনা যায় না আর তন্ত্রসাধনার জন্য নরবলি হয় নারী নয়। বলির নিয়ম অনুযায়ী পবিত্র জিনিসেরই বলি হয়। তাই বলির আগে ধর্ষণের তত্ত্ব খাটেনা। এছাড়া দেহ উদ্ধার হয় প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে। যদিও তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তর বাড়ি থেকে বাচ্চাদের চটি উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু সেই চটি যে ওই নাবালিকার, সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি। এরপরেই আদালত দুজনকে বেকসুর খালাস করে। তবে প্রকৃত খুনি কে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আইনের পথ যদিও এখনও খোলা। এই ঘটনার পুনরায় তদন্ত শুরু করতে পারেন মৃতের বাবা।