প্রতিবেদন : আগামী ২২ থেকে ২৬ নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই বৃহস্পতিবার ১৫ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস লিগ্যাল সেল। তৃণমূলের প্যানেল প্রেসিডেন্ট পদে লড়বেন বর্ষীয়ান আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়। সেক্রেটারি পদে লড়বেন বিশ্বব্রত বসুমল্লিক। অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদে দুই প্রার্থী সোনাল সিনহা ও ওয়াসিম আহমেদ। কোষাধ্যক্ষ পদে জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও এগজিকিউটিভ কমিটি মেম্বার পদে তৃণমূলের প্যানেলে রয়েছেন ৯ জন আইনজীবী। তাঁরা হলেন দেবযানী সাহু, কাকলি নস্কর, মহুয়া দত্তবিশ্বাস, পর্ণা রায়চৌধুরী, রাজ্জাক হোসেন, সংগীতা রায়, সংযুক্তা সামন্ত, সুমন সাহা, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় (দাশগুপ্ত)। হাইকোর্টে এদিন প্যানেল প্রকাশের সময় ছিলেন সর্দার আমজাদ আলি, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, বিধায়ক অশোক দেব, বিশ্বজিৎ দেব, অশোক দণ্ডনীয়া। এছাড়াও ছিলেন হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে তৃণমূলপন্থী আইনজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক তরুণ চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। মূলত ৭টি অ্যাজেন্ডাকে সামনে রেখে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে লড়ছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। সার্বিকভাবে হাইকোর্ট ও আইনজীবীদের সুবিধা বা উন্নতির কথা মাথায় রেখে ‘ইস্তাহার’ প্রকাশ করা হয় তৃণমূল লিগ্যাল সেলের পক্ষ থেকে।
ভিশন ফর আ ব্রাইটার ফিউচার অফ দ্য বার অ্যাসোসিয়েশন
ডিজিটালাইজেশন : হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে তৃণমূল যদি ক্ষমতায় আসে সেক্ষেত্রে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার হাইকোর্টে অনেক বাড়ানো হবে। উন্নতমানের ওয়াই-ফাই পরিষেবা থেকে শুরু করে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল প্রকাশ করা হবে। অর্থাৎ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনকে ডিজিটালাইজেশনের পথে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি তৃণমূল লিগ্যাল সেলের ইস্তাহারে।
অ্যাকাডেমিক এনগেজমেন্ট : একাধিক কর্মসূচির মাধ্যমে জুনিয়র আইনজীবীদের আরও দক্ষ করে তোলার প্রয়াস নেবে বার অ্যাসোসিয়েশন। সেক্ষেত্রে সিনিয়র আইনজীবীরা স্টাডি গ্রুপ বানিয়ে জুনিয়রদের সহযোগিতা করবেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন। এছাড়াও এক্সিবিশন, ক্যুইজ, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইনজীবীদের মধ্যে একটা পারিবারিক সম্পর্ক করে তোলার প্রয়াস নেওয়া হবে।
ইনফ্রাস্ট্রাকচার : হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের আধুনিকীকরণে জোর দেওয়া হবে। বার অ্যাসোসিয়েশনের খোলনলচে বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় তৃণমূল সেলের পক্ষ থেকে। আরও বেশি বেশি কম্পিউটার, প্রিন্টার, ড্রয়ার থেকে শুরু করে বসার জন্য আধুনিক ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে একটি সুন্দর কাজের পরিবেশ তৈরি করা হবে বার অ্যাসোসিয়েশনকে কেন্দ্র করে।
আরও পড়ুন : এমপি ল্যাডের টাকা আটকে , উন্নয়ন রুখছে কেন্দ্র
অ্যাডিশনাল ফেসিলিটিস : রাজ্য সরকারের সহায়তায় বার অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেন্স রুমকে বাতানুকূল করা হবে। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের জন্য ব্যাঙ্কিং সুবিধা ও এটিএমের ব্যবস্থা করা হবে বার অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যেই।
ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্ট : রাজ্য সরকার ও বার কাউন্সিলের সহযোগিতায় হাইকোর্টের জুনিয়র আইনজীবীদের জন্য কমপক্ষে দু’বছরের মাসিক ভাতা চালু করা হবে।
হেলথ অ্যান্ড হাইজিন : হাইকোর্টের সমস্ত আইনজীবীর সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। নিয়ম করে হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রত্যেকটি রুম স্যানিটাইজ করা হবে। করোনাকালে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হবে। খোলা হবে হেলথ কেয়ার সেন্টার। বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে উন্নতমানের শৌচালয় তৈরি করা হবে।
ওয়েলফেয়ার : আইনজীবীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বাস ও ট্রেনে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হবে। চালু করা হবে গ্রুপ ইন্সুরেন্স পলিসি। ব্যবস্থা করা হবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের। এছাড়া যে সকল আইনজীবীর বাড়ি-ঘরের সমস্যা রয়েছে বা যাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাঁদের কলকাতায় এইচআইজি, এমআইজি, এলআইজি হাউসিং স্কিমের আওতায় আনা হবে। এদিন প্যানেল প্রকাশের সময় উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেস আইনজীবী সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীরা তৃণমূল লিগ্যাল সেলের মনোনীত প্রার্থীদের জয়যুক্ত করার জন্য হাইকোর্টের সমস্ত আইনজীবী ও বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের আহ্বান জানান। বার অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস এলে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত আইনজীবী ও হাইকোর্টের উন্নতির জন্য কাজ করা হবে বলে জানানো হয়।