রিতিশা সরকার, শিলিগুড়ি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বদলে যেতে চলেছে পাহাড়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের পর সেই বিশ্বাস তৈরি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিকের বাসিন্দাদের। কার্শিয়াংয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের স্পষ্টভাবে মমতা বন্দ্যােপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও বিভাজন নয়, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনুন। প্রতিষ্ঠা করুন গণতন্ত্রকে। উন্নয়নের দায়িত্ব আমার। প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর এই স্পষ্ট বক্তব্যে পাহাড়বাসীর মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে। অনীত থাপা পৃথকভাবে তৈরি করেছেন দল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেছেন, যদি সত্যি পাহাড়ের উন্নতি চাও আমাকে লিখিতভাবে দাও। ওই রিপোর্ট নিয়ে পর্যালোচনা হবে। কাজও হবে।
আরও পড়ুন : ভারতকে ১১০ রানে আটকে রাখা বড় কৃতিত্ব, দাবি স্টিডের
ইতিমধ্যে একটি কমিটি তৈরি করেছেন, যে কমিটিতে অনীত থাপা ছাড়া রয়েছেন শিলিগুড়ির পুর প্রশাসক প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্যেই ঘোষণা করেছিলেন চলতি মাসেই তিনি ফের পাহাড়ে আসবেন। ওই সময় উন্নয়নের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। তার আগে সব প্রস্তাব তৈরি করে রাখতে বলেছেন তিনি। অনীত থাপা বলেছেন, আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে শুধু আপ্লুত নই, স্বপ্ন দেখছি নতুন দার্জিলিং গড়ে উঠবে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, পাহাড়ের ঝরনার জলকে নিয়ে বটলিং প্ল্যান্ট তৈরি করা। পাহাড়ে প্রায় চার হাজার সরকারি পদ ফাঁকা। এই সব পদে কর্মী নিয়োগ নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। তবে ঝরনার জলে বটলিং প্ল্যান্ট তৈরি হলে পাহাড়ের অর্থনীতির যেমন নতুন দিশা তৈরি হবে, পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকায় এভাবে যে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব তা গোটা দেশকে পথ দেখাবে। পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, বিভিন্ন স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নিয়ােগের জন্য পৃথক বোর্ডের কথা বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন অনীত থাপা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে থেকেই বলেছিলেন পাহাড়কে আর কংক্রিটের জঙ্গল করা যাবে না। বরং জোর দিতে হবে সবুজায়নে। এজন্য জেলা প্রশাসনকে বিশেষ উদ্যোগ নিতেও বলেছেন। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বলেওছিলেন পাহাড়ে কেন আইটি হাব হবে না। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি সরকার পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করেনি। বরং বিভাজনের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে পাহাড়ের থেকে সাংসদ নিয়ে গিয়েছেন দিল্লিতে। সব সাংসদই বহিরাগত। তাঁদের জয়ের পর আর পাহাড়বাসীর পাশে থাকতে দেখা যায়নি তাঁদের। স্বভাবতই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পাহাড়বাসীর মধ্যে। উন্নয়ন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমান্তরাল নাম তা প্রমাণিত। এবার পাহাড়ের উন্নয়নে সেই কাজই তিনি আরও তৎপরতার সঙ্গে চালু করতে চলেছেন।