প্রতিবেদন : বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে রক্ষা নেই হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টেরও। এভারেস্টের উচ্চতম হিমবাহ সাউথ কল-সহ অন্য হিমবাহগুলি দ্রুত গলছে। সহস্রাব্দ ধরে তৈরি সাউথ কল হিমবাহটি গত কয়েক দশকেই উষ্ণায়নের প্রভাবে উল্লেখযোগ্যভাবে গলেছে, কমেছে তার উচ্চতা। এর ফলে বেড়ে চলেছে সমুদ্রের জলস্তর। যা আগামী বিশ্বে মহাসংকট বয়ে আনতে চলেছে। ভূ-বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আসন্ন এই বিপদের ফলে বিপন্ন হতে পারে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ। আর সেই বিপদের হাত থেকে বাদ যাবে না ভারতও।
আরও পড়ুন-বালুচিস্তানে বিস্ফোরণে হত ৭ পাকসেনা
সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে হিমবাহগুলির গলনের তীব্রতা অনেকটাই বেড়েছে। বিগত ৩৫ বছরে ৫৪ মিটারেরও বেশি গলে গিয়েছে হিমালয়ের হিমবাহ। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেডেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের ক্রায়োস্ফিয়ার বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে বড় বিপদ ঘনিয়ে আসছে পৃথিবীতে। হিমবাহ গলে সমুদ্রের জলস্তর যত বাড়তে থাকবে, ততই জলের উৎসের সংকট সৃষ্টি হবে। হিমালয়ের হিন্দুকুশ পর্বতমালা আটটি দেশে বিস্তৃত। ভারত-সহ সেই দেশগুলিতে হিমবাহ গঠনের ফলে বিপন্ন হবে জনজাতি। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় হিমবাহ গলছে, বদলাচ্ছে তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টিপাতের ধরনও। পর্বতাঞ্চলেও অতিরিক্ত মাত্রায় বৃষ্টি হচ্ছে এবং তুষারপাত অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, হিন্দুকুশ পর্বতমালায় প্রায় ৫৬ হাজার হিমবাহের ৬৫ শতাংশ গলেছে। বর্তমান শতাব্দীর শেষে হিমবাহগুলির ৮০ শতাংশ গলে যাবে। হিমবাহ থেকেই প্রাকৃতিক হ্রদ সৃষ্টি হয়, যা পানীয় ও সেচের জলের অন্যতম উৎস। হিমবাহ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে জলের সেই উৎস হারিয়ে যাবে। পার্বত্য নদী-নালা শুকনো হয়ে যাবে। তারপর হ্রদের চারধারে বরফের বাঁধ ভেঙে গেলে হড়পা বান তৈরি হবে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাবে গ্রামের পর গ্রাম। ভেঙে পড়বে গ্রাম-নগরের যাবতীয় পরিকাঠামো।
আরও পড়ুন-নারী-ক্ষমতায়ণে মডেল বাংলাই
এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা নেই ভারতেরও। কারণ ভারতের অধিকাংশ উত্তর ভারতীয় নদী হিমালয়ের বরফগলা জলে পুষ্ট। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এর ফলে বিপন্ন হবে। ধ্বংসের মুখে দাঁড়াবে মানবসভ্যতা।