প্রতিবেদন : কাশ্মীরের গণহত্যার ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও অধরা জঙ্গিরা। কাশ্মীর উপত্যকায় চলছে চিরুনি তল্লাশি। তবে এখনও পর্যন্ত সাফল্য আসেনি। এর মধ্যে বন্দিপুরা ও আরও একটি জায়গায় সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে অন্য দুই জঙ্গি নিকেশ হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে আরও এক সেনা জওয়ানের (নদীয়ার ঝন্টু শেখ)। কিন্তু এখন এত অপারেশন— দিল্লিতে ঘন ঘন প্রধানমন্ত্রী-সহ সরকারের শীর্ষস্তরে বৈঠক হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ৫টি প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
১. জঙ্গিরা সীমান্ত পেরল কীভাবে?
২. সীমান্ত পেরনোর পর পহেলগাঁওয়ে পৌঁছল কী করে?
৩. সীমান্তের এপারে কোথায় আশ্রয় নিল জঙ্গিরা, কারা আশ্রয় দিল, খাবার জোগাল গোয়েন্দারা জানতেই পারল না!
৪. একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে অনেকক্ষণ গুলি চলল, কিন্তু আশেপাশে কোথাও কোনও সেনা-জওয়ান ছিল না। কেন?
৫. হামলা করে নির্বিবাদে গুলি চালিয়ে সেফ প্যাসেজ দিয়ে জঙ্গিরা বিনা বাধায় পালিয়েও গেল। এটা কী করে সম্ভব হল?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই কাছে। সম্পূর্ণ ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র দফতর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও এর কোনও সঠিক জবাব নেই। এখন চলছে শুধু বাজার গরম করার খেলা। ভাবখানা এমন এই বুঝি যুদ্ধ করে গোটা পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দেবে! এই প্রথমবার নয় এর আগেও জঙ্গি হামলা চালিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল জঙ্গিরা। এই ঘটনা ঘটানোর পরেও লাশকাটা মোহাম্মদ-সহ একাধিক জঙ্গি সংগঠন থেকে দায় স্বীকার করা হয়েছে। কার্যকর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যেও বিহারের নির্বাচনে বক্তৃতা করতে গিয়ে গরম গরম কথা বলে এসেছেন অথচ এখনও পর্যন্ত সেই অর্থে পাল্টা জবাব দিয়ে উঠতে পারেননি। গোয়েন্দা ব্যর্থতা, পহেলগাঁও (Pahalgam attack) এ সেনা না থাকা, সঠিক খবর সঠিক সময় না পৌঁছানো। সব মিলিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের চরম ব্যর্থতার পর তাঁর পদত্যাগের দাবি ইতিমধ্যেই উঠেছে। এরপরেও বিজেপি নেতারা ভাষণবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন টেলিভিশন চ্যানেলে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু আসল ঘটনার ব্যাখ্যা বা উত্তর কোনওটাই তাঁদের কাছে নেই। এমনকী জঙ্গিরা ঠিক কোথায় লুকিয়ে আছে তার সঠিক হদিশও এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এক একবার এক এক রকম কথা বলা হচ্ছে। কাশ্মীর উপত্যকায় ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির ভাবখানা এমন ছিল সমস্ত সন্ত্রাস সমূলে উপড়ে ফেলা হল। আর কোথাও কোনওদিন কখনও এই উপত্যকায় কোনও সন্ত্রাস বা জঙ্গিহানা হবে না। এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে এই জঙ্গি হামলায় ৩২ জন সহনাগরিকের অকালপ্রয়াণের পর। এর পরেও কী শিক্ষা নেবে কেন্দ্রীয় সরকার?
আরও পড়ুন- উঠল অবস্থান, কাজে ফিরছেন শিক্ষকেরা