নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি: বিরোধী দলগুলি মণিপুর নিয়ে আলোচনা চাইতেই তার মোকাবিলায় সোমবার অধিবেশন শুরু হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যেই দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করে দেওয়া হয় লোকসভা। বাদল অধিবেশনের শুরুর থেকেই অগ্নগর্ভ মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা চাইছে বিরোধী শিবির। ইন্ডিয়া জোটের দাবি, সংসদের দুই কক্ষে এসে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিবৃতি দিতে হবে।
আরও পড়ুন-বিয়েবাড়িতে অপচয় রুখতে প্রস্তাব, লোকসভায় নয়া প্রাইভেট বিল পেশ
কিন্তু সংবাদমাধ্যমে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মন্তব্য করা ছাড়া সরকারের প্রধান হিসেবে নরেন্দ্র মোদি সংসদে এসে এখনও পর্যন্ত বিধ্বস্ত মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেননি। রাজ্যে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার থাকার পরও তিনমাস ধরে জ্বলতে থাকা মণিপুর নিয়ে একটাও মন্তব্য করার সৎসাহস দেখাননি মোদি। মণিপুর ইস্যুতে সরকার আর বিরোধী পক্ষের এই টানাপোড়নে ক্রমাগত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাদল অধিবেশনের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিনেও মণিপুর প্রসঙ্গ উঠলে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায় লোকসভার কাজকর্ম।
সরকারের এই অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বলা হয়, মণিপুর প্রসঙ্গ উঠতেই বিদ্যুতগতিতে তিন মিনিটের মধ্যে স্পিকার লোকসভার অধিবেশন দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করার সিদ্ধান্ত নিলেন! এর কারণ বিরোধী দলগুলি মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবি করছিল। ৩ মিনিটের অস্বস্তি সহ্য করা যদি চ্যালেঞ্জিং বলে প্রমাণিত হয় তাহলে কীভাবে গত ৩ মাস ধরে জ্বলতে থাকা মণিপুর নিয়ে বিজেপি সরকার স্বস্তিতে থাকতে পারে?
আরও পড়ুন-চন্দ্রদর্শনের ছবি পাঠাল চন্দ্রযান-৩
সংসদে অনাস্থা বিতর্ক:
প্রধানমন্ত্রীকে আইনের আওতায় বেঁধে সভায় এনে মণিপুর ইস্যুতে বক্তব্য রাখায় বাধ্য করতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে ইন্ডিয়ার তরফে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা। মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার লোকসভায় অনাস্থা নিয়ে আলোচনা হবে ৪ ঘণ্টা করে। প্রথমে ১৭ ঘণ্টা সময় দিলেও পরে তা কমিয়ে ১২ ঘণ্টা করা হয়। তার মধ্যে তৃণমূলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩০ মিনিট সময়। অনাস্থা নিয়ে তৃণমূলের তরফে বক্তা সৌগত রায় এবং কাকলি ঘোষদস্তিদার। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত, সংসদীয় গণতন্ত্রের অবমাননার অভিযোগ থেকে শুরু করে মণিপুর প্রসঙ্গ তুলবে তৃণমূল কংগ্রেস। মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় মণিপুরি ভাষায় বক্তব্য রাখবেন কাকলি ঘোষদস্তিদার। মণিপুরের পরিস্থিতি দেখতে যাওয়া ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন কাকলি। এদিকে সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার পর বিরোধী শিবিরের পক্ষে মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে রাহুল গান্ধী প্রথম বক্তব্য রাখবেন।