মহানগরে জননেত্রীর মহামিছিল

আর কত পেলে মিথ্যা কথা বলা ছাড়বেন মোদিবাবু! আর কত দাম দিতে হবে দেশকে! সবাই বলছে হাওয়া বদল হচ্ছে। শেয়ার বাজারও বলছে।

Must read

প্রতিবেদন : আর কত পেলে মিথ্যা কথা বলা ছাড়বেন মোদিবাবু! আর কত দাম দিতে হবে দেশকে! সবাই বলছে হাওয়া বদল হচ্ছে। শেয়ার বাজারও বলছে। দেশে যা হাওয়া মোদিবাবুরা একেবারেই যাচ্ছেন। মঙ্গলবার কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী মালা রায়ের সমর্থনে বেহালার জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন তাঁর অনুমানই সত্য হতে চলেছে। বিজেপি এবার পগার পার। তাঁর কথায়, খুব তো বড়াই করে বলেছিল, ইসবার ৪০০ পার। কিন্তু শেয়ার বাজারে কত রেট উঠেছে জানেন, ইন্ডিয়াকে দিয়েছে ৩৪৮। তার মানে বুঝতে পারছেন বিজেপি ক’টা পাচ্ছে। শুধু মিথ্যাচার আর দাম্ভিকতা। এবার মানুষ জবাব দেবেন ব্যালটে। সাত আটদিন পরেই প্রধানমন্ত্রীকে প্রাক্তন করে দেবেন।

আরও পড়ুন-আজ শহরে ফুটবলাররা

ভূরি ভূরি মিথ্যা : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আবার বলছে বাংলার সরকার ফেলার জন্য এই ইলেকশন। ভোটের সময় আসে, আর ভূরি ভূরি মিথ্যা কথা বলে। মঙ্গলবার ফের বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি নাকি দিল্লি থেকে মনিটরিং করেছেন সাইক্লোন। প্রধানমন্ত্রী আপনার কি এই কথাটা বলা উচিত! আপনি এনডিআরএফ দেখাচ্ছেন! আগামী দিন প্রয়োজনে এনডিআরএফ নেব না। মিটিংয়ে গিয়ে মিথ্যা কথা! উনি নাকি মা কালীকে প্রণাম করে সাইক্লোন আটকে দিয়েছেন!
অসম্মান মানব না : তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট কথা, যাঁরা গদ্দারি করে বেড়াচ্ছেন আর বাংলার যাঁরা বদনাম করছেন, তাঁদের বলছি, সাহস থাকা ভাল দুঃসাহস ভাল নয়। চিরকাল বাংলাকে অসম্মান করেছেন আপনারা। আমরা ছেড়ে কথা বলব না। বাংলার মাটির জন্য জীবন দিতে রাজি আছি। কিন্তু বাংলাকে অসম্মান করতে দেব না। আবার বলছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে হাত দিলে বিষদাঁত ভেঙে দেবে বাংলার মায়েরা।

আরও পড়ুন-তৃণমূলের তারকা প্রচারক তালিকা

রাজনীতির পাতালে : তিনি বলেন, এমন প্রধানমন্ত্রী দেশের দরকার নেই। আপনি তো দেবতা, রাজনীতির পাতালে প্রবেশ করুন। দেশের মানুষকে যেন বারবার অগ্নিপরীক্ষা দিতে না হয়। কী করেননি? একদিনে ১৪৭ জন সাংসদকে বহিষ্কার করেছেন, মহুয়া মৈত্রকে সাংসদ পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন, তাঁর বাবা-মাকে রেড করেছেন। সব বিল পাশ করে নিয়েছেন। আবার বলছেন, জগন্নাথদেবও ওনার ভক্ত ছিলেন! দেবতা ছিলেন যখন, আপনার তো রাজনীতি করা শোভা পায় না। মন্দির বানিয়ে দেব, ফুল-তুলসী–চন্দন দেব। দেবালয়ে শান্তিতে ঘুমোন।
মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওনার একটাই কাজ বাংলাকে লাঞ্ছনা করা। শুধু বাংলাকে বঞ্চনা করে গিয়েছেন। একটাও কালাধন আনতে পেরেছেন? নাকি মাফিয়াগুলোকে দলে ঢুকিয়ে সফেদ করেছেন। দেশটাকে জেলখানা বানিয়ে দিয়েছেন আপনারা। সব দেবতার দেবতা উনি। আবার বলেন, মমতাজি বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেন না। দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়ে মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে।
মোদিবাবুদের খুড়োর কল : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজ পর্যন্ত একটাও ইন্টারভিউ দেননি। মুখোমুখি চ্যালেঞ্জে বসবেন? কোথায় বসবেন? গুজরাটে। প্রেস প্রশ্ন করবে। আপনি উত্তর দেবেন, আমিও উত্তর দেব। দেখতে চাই আপনি কত জ্ঞানী! সব কিছু বিক্রি করে দিয়েছেন, দেশটাই বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই এবার মোদি যাক, দেশ থাক। চাকরিখেকো বিজেপি পার্টি। ২৬ হাজারের চাকরি খেয়ে নিল। আবার ওবিসি সার্টিফিকেটও বাতিল করে দিয়েছে। এসব মোদিবাবুদের খুড়োর কল। কিছু করার আগে একটা প্ল্যান করে। যেমন সন্দেশখালি নিয়ে করেছিল।

আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচারের পাল্টা পাঁচ প্রশ্ন তৃণমূলের

জবাব ব্যালটে : তাঁর কথায়, বিজেপি সন্দেশখালিতে মা-বোনেদের অসম্মান করেছে। সন্দেশখালিকে ইস্যু করার চেষ্টা করেছিল। পৃথিবীতে বাংলার মাথা হেঁট করে দিয়েছে। এখন সব ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তাই বাংলায় আসছেন আর মিথ্যাচার করছেন। যতবার আসেন একজন করে আইএএসকে সরান। এই দাম্ভিকতার জবাব ব্যালটে দেবে মানুষ।
একটাই কাজ বাকি : মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১-এর আগে তৃণমূল যা কথা দিয়েছিল সব করেছে। বিনা পয়সায় রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষক ভাতা, স্মার্ট কার্ড, এমনকী যা বলেনি সবুজসাথী, ঐক্যশ্রী, শিক্ষাশ্রী, রূপশ্রী, মেধাশ্রী সব করেছি। ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী সবাই পাচ্ছেন। প্রতিটি সাব ডিভিশনে আইসিইউ করা হয়েছে। ৪৫টা বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৩টা মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে। আমরা পাহাড়, বনাঞ্চলে ওয়েটিং হাব করেছি। কখনও কেউ ভাবতে পেরেছে? মধুর স্নেহ নামে মিল্ক ব্যাঙ্ক করেছি। চোখের আলোটা পর্যন্ত দিয়েছি। এখন একটাই কাজ বাকি আছে, বিজেপিকে হটানো।
তাকাবেন না : তিনি বলেন, দেশের ইকোনমি বিক্রি করে দিয়েছে বিজেপি। আইআইটি ছেলেমেয়েদের ৩০ শতাংশ চাকরি পায় না। বাংলার দিকে চোখ তুলে তাকাবেন না। আমরা জিএসটি ৩ শতাংশ এগিয়ে আছি কেন্দ্রের থেকে। আমরা স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রিতে এক নম্বর। বাংলায় ৪০ শতাংশ দারিদ্র্য কমেছে। শিল্প তৈরি হচ্ছে, ইকোনমিক করিডর তৈরি হচ্ছে। তোমরা একশো দিনের কাজে টাকা দাওনি, বন্ধ করে দিয়েছ। আমরা টাকা দিয়েছি, কর্মশ্রী চালু করেছি। আবাস নিয়েও মিথ্যা কথা বলছ। আমরা ৪৩ লক্ষ বাড়ি করে দিয়েছি। ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি রাজ্য সরকারের তরফে আমরা করে দেব।
উপড়ে ফেলব : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলায় আমরা জোটে নেই। চিটফান্ডের জন্মদাতাদের সঙ্গে ঘর করতে পারব না আমরা। বাংলায় তৃণমূল একা লড়ছে, একা লড়বে। মোদিজি জেনে রেখো তোমাকে আমরা গণ-আদালতে উপড়ে ফেলব। এই বাংলার জন্যই স্বাধীনতা আন্দোলন, নবজাগরণ হয়েছিল। বিজেপিকে হটাতে হলেও পথ দেখাবে বাংলাই।

Latest article