লন্ডন, ১২ জুলাই : সর্বকালের সেরা অ্যাথলিটদের মধ্যে অন্যতম তিনি। সেই গ্রেট ব্রিটেনের মো ফারা কিনা শিশু পাচারের শিকার! ৩৯ বছর বয়সি ফারার ঝুলিতে রয়েছে চার-চারটি অলিম্পিক সোনা। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের আসরে জিতেছেন ছ’টি সোনা।
অথচ মাত্র ৯ বছর বয়সে শিশুশ্রমিক হিসেবে ব্রিটেনে পা রেখেছিলেন। বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘দ্য রিয়েল মো ফারা’-তে এই কথা ফাঁস করেছেন স্বয়ং কিংবদন্তি স্প্রিন্টার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর আসল নাম হোসেন আবদি কাহিন। ব্রিটেনে আসার পর নাম পাল্টে মো ফারা রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই নাম ছিল অন্য এক শিশুর।
আরও পড়ুন-কুমিরের পেট চিরে শিশু উদ্ধারের দাবি
তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘সত্যি কথাটা হল, সবাই আমাকে যেভাবে চেনেন, আমি আসলে তা নই। আমার জন্ম সোমালিল্যান্ডে। যা সোমালিয়ার উত্তরে অবস্থিত। আমার বয়স যখন মাত্র চার, তখন বাবা সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধে নিহত হন। মা ও ভাইয়ের সঙ্গে আমি আলাদা হয়ে গিয়েছিলাম। আমার যখন ৯ বছর বয়স, তখন এক মহিলা আমাকে ব্রিটেনে নিয়ে আসেন। বলতে পারেন আমি শিশু পাচারের শিকার হয়েছিলাম।’’ মো ফারা আরও জানিয়েছেন, ওই মহিলাই তাঁর নাম বদলে দেন। শুধু তাই নয়, তাঁর আসল পরিচয়পত্র-সহ যাবতীয় নথি ছিঁড়ে ফেলে দেন। এক ব্রিটিশ পরিবারে বাচ্চাদের দেখাশোনা-সহ বাড়ির যাবতীয় কাজ করতে হত তাঁকে। বিনিময়ে পেতেন দু’বেলার খাবার।
আরও পড়ুন-জামিন বিধি সরল হোক
ওই কঠিন সময়ে মো ফারার জীবনে দেবদূত হয়ে দেখা দেন অ্যালান ওয়াটকিন্স। যিনি ছিলেন স্থানীয় একটি স্কুলের গেম টিচার। ওয়াটকিন্সকে সব কথা খুলে বলেন মো ফারা। তিনিই তাঁকে নিয়ে যান স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে। স্কুলে ভর্তি করার পাশাপাশি ব্রিটেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতেও সাহায্য করেন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মো ফারাকে। শিশুশ্রমিক থেকে কিংবদন্তি অ্যাথলিট—তাঁর এই রূপকথার উত্থানের সাক্ষী তো আজ গোটা বিশ্ব।