ভোটের আগে বিজেপির চক্রান্ত, প্রতারণা। সিএএ মানছি না, প্রাণ থাকতে এনআরসি হতে দেব না। মঙ্গলবার, হাবড়ার মঞ্চ থেকে হুঙ্কার দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি দেশজুড়ে অশান্তির খেলা শুরু করেছে।
লোকসভা ভোটের আগে এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “যদি ক্যা (CAA) দেখিয়ে NRC নিয়ে এসে কারও নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় তাহলে আমরা কঠোর প্রতিবাদ করব। কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে, এই চালাকি আমরা মানব না।“ আশঙ্কা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) বলেন, “রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবেন। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব কোথাও কোথাও দেখেছেন!“ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আপনাকে আগে বেআইনি হয়ে যেতে হবে। তারপর আদৌ নাগরিক হবেন কি না তার কোনও গ্যারান্টি নেই“।
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রথমে বেআইনি হিসাবে ঘোষণা করবে। বলবে অনুপ্রবেশকারী।“ তাঁর অভিযোগ, ”আপনারা কি বিজেপির হাতে আপনার ভাগ্য দিয়ে দেবেন? শুধু একটা ভোটের জন্য, দুটো সিটে জেতার জন্য আপনাদের ভাঁওতা দিচ্ছে, ধাপ্পা দিচ্ছে, সব জুমলা। মনে রাখবেন সব হারাবেন। এটাও যাবে, ওটাও যাবে। বিজেপির খেলা হচ্ছে, হিন্দুতে হিন্দুতে ভাগ করে দেওয়া। মুসলিমে-মুসলিমে ভাগ করে দেওয়া। সব রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে। এই CAA কিন্তু NRC-র সঙ্গে যুক্ত।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, আজ নির্বাচনের দুদিন আগে কেন ক্যা (CAA) ? এতদিন কেন করেনি? ভোটটাও দিতে পারবেন কি না তাতেও সন্দেহ আছে! আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সিএএ টোটাল ভাঁওতা! তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী
হুঙ্কার দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কাউকে বাংলা থেকে বিতাড়িত হতে দেব না। সারা ভারতে যদি কোনও দিন সুযোগ আসে, তখন আমরা কিছুতেই এই সব করতে দেব না। এনআরসিও করতে দেব না।“
তীব্র প্রতিবাদ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিএএ বাংলাকে আবার ভাগ করার খেলা। মুসলিম, নমঃশূদ্র, বাঙালিদের তাড়ানোর খেলা এটা। আমরা এটা করতে দিচ্ছি না। দেব না। আমরা সবাই নাগরিক। সিএএ করলে যাঁরা নাগরিক, তাঁরা অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবে।“
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কাল থেকে উত্তরপূর্বের মানুষ কাঁদছে। সংখ্যালঘু, হিন্দুরাও কাঁদছে। একবছর আগে করলে বোঝা যেত মানুষ অধিকার পায় কি না! মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিএএ কী ভাবে রূপায়ণ হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার ভাবে কিছু জানানো হয়নি আইনে। তফসিলি, আদিবাসী, মতুয়াদের সংরক্ষণ নিয়ে কী হবে, তা-ও পরিষ্কার করা নেই।“
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, “বিজেপি ভয়ানক এবং কুৎসিত দল। ওরা আসল হিন্দুদের মানে না। ওরা রামকৃষ্ণ, পঞ্চানন বর্মা, সারদা মা, মতুয়া ঠাকুরদের মানে না। আমাদের সংস্কৃতিকে নষ্ট করতে চাই। শুধু আমার সঙ্গে পারে না। ওরা আমাকে লাঠি দেখালে আমি ডান্ডা দেখায়।“
মতুয়াদের উদ্দেশ্য মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মতুয়া ঠাকুরবাড়ি কে করেছে? বড়মা যতদিন বেঁচেছিলেন তাঁর দেখাশোনা আমি করেছি, মমতাবালা ঠাকুর করেছে। বড়মা অসুস্থ হলে বেলভিউ তে ভর্তি করতাম। মতুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ- সবটাই করব আমরা, আমাদের অধিকার নাগরিকের অধিকার। অধিকার কাড়তে দেব না।“