প্রতিবেদন : বিচারব্যবস্থার একাংশ যে নিরপেক্ষ নয় ফের তা প্রমাণ হয়ে গেল। এবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস (Chittaranjan Das) তাঁর বিদায়বেলায় নিজেই জানিয়ে গেলেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই আরএসএসের সদস্য। আরএসএস কতখানি তাঁকে মনেপ্রাণে অনুপ্রাণিত করেছে এবং তিনি কী কী শিখেছেন এই সংগঠন থেকে তাও বলেছেন সগর্বে। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন তিনি এখনও সংঘের সদস্য। ফিরে গিয়ে ফের আরএসএস করবেন।
আদপে ওড়িশার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন (Chittaranjan Das) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেছেন। শেষদিনে বিদায়ী ভাষণে তিনি বলেন, তাঁর ছেলেবেলা ও যৌবন কেটেছে আরএসএসের সান্নিধ্যে। সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার পরে, আরএসএস ছেড়ে দেন। অর্থাৎ এখনও সেই আদর্শ মেনেই চিত্তরঞ্জন দাস চলেছেন। প্রশ্ন উঠছে, এইভাবে একের পর এক বিচারপতিদের গেরুয়া যোগ যদি স্পষ্ট হয়, তবে তাঁদের কাছে নিরাপেক্ষতা কতটা আশা করবেন বিচারপ্রার্থীরা! তাঁদের রায়ে, মতাদর্শের কোনও ছায়া কি পড়ে না, বা পড়েনি? যতই তিনি দাবি করুন তাঁর বিচারাধীন কোনও বিষয়ে তিনি কখনও পক্ষপাতিত্ব করেননি।
সম্প্রতি প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচারপতির আসনে বসে দেওয়া একের পর এক পক্ষপাতমূলক রায় আর তার ঠিক পরেই বিজেপিতে যোগ দিয়ে একেবারে লোকসভার প্রার্থী হয়ে যাওয়া– বঙ্গবাসীর কাছে এখনও টাটকা এই ছবি। আরও দু-একজন বিচারপতি যে পক্ষপাতদুষ্ট রায় দিয়েছেন তাও হাতে কলমে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারে বলেছেন যে বিচার ব্যবস্থার একাংশ নিরপেক্ষ নয়। সেই অভিযোগ যে কতখানি সত্যি তাও একাধিকবার একাধিক রায়ে তা প্রমাণিত হয়েছে। কেননা কলকাতা হাইকোর্টের সেই সমস্ত রায় পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্টে সম্পূর্ণ খারিজ হয়েছে অথবা বদলে গিয়েছে। এবার অবসর নেওয়া বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের এই বক্তব্যে নতুন করে সেই বিতর্ক উসকে দিল।