প্রতিবেদন : শাস্ত্র অনুসারে চিন্ময়ী উমা ফিরে গিয়েছেন কৈলাসে। তবে এখন বেশিরভাগ মণ্ডপেই রয়ে গিয়েছেন মৃন্ময়ী দুর্গা৷ পুজোর ছুটির আগেই নবান্ন জানিয়ে দিয়েছে, দুর্গা-বিসর্জন শুরু হবে ১৫ অক্টোবর এবং ১৮ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতেই হবে। অতিমারি পরিস্থিতিতে গত বছরের বিসর্জন-পর্ব অনেকটাই অন্যরকম ছিল৷ এবারও তেমন বিধিই বহাল রয়েছে৷ ঘাটে ঘাটে এবারও অন্য ছবি৷ পুজো উদ্যোক্তাদের দেওয়া অনুমতিপত্র অনুযায়ী, নির্ধারিত দিন, সময় ও নির্দিষ্ট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে। নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানো যাবে না। বিসর্জনের ঘাটে পুজো কমিটির সদস্যদের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। পুলিশের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে তাঁদের। কোভিডবিধি অগ্রাহ্য করে যদি কোনও পুজো কমিটি শোভাযাত্রা করে, তবে পুলিশ সেই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন-গ্রেটার কৈলাসের মিনিয়েচার দুর্গা
প্রতিমা বিসর্জনের জন্য গঙ্গায় ১৭টি ঘাটে তৈরি রয়েছে কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ। সব ঘাটেই মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ বিসর্জনের ঘাটগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন ৩ হাজার পুলিশ কর্মী৷ বিসর্জনে সাহায্য করতে রয়েছেন ২ হাজারের বেশি পুরকর্মী ও অফিসার। বিসর্জন দিতে আসা ব্যক্তিদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ২টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলবে পুলিশের নজরদারি। ডিজে অথবা মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ঘাট চত্বরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিমার জন্য গাড়ির সংখ্যাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিসর্জনের পুলিশি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছেন কলকাতা পুলিশের ৩ জন জয়েন্ট সিপি৷ পাশাপাশি, শুক্রবার সকাল থেকেই ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ বা ডিএমজি-র বিশেষ উদ্ধারকারী দলকেও তৈরি রাখা হয়েছে৷ এক একটি দলে স্কুবা ডাইভিং সেট-সহ ৫ জন বিশেষ প্রশিক্ষিত ডিএমজি-ডুবুরি রয়েছেন৷ পাশাপাশি, স্পিড বোটে টহল দিয়ে চলেছে ডিএমজি’র দল। একইসঙ্গে ডিএমজি’র অন্য একটি দল রয়েছে রিভার ট্রাফিক পুলিশের লঞ্চে। জানা গিয়েছে, ঘাটে দু’টি করে মোট ৮টি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ তৈরি আছে। এই গ্রুপগুলি বোটে টহল দিচ্ছে৷ প্রত্যেক ঘাটে রয়েছে পুলিশের ডুবুরিও৷
আরও পড়ুন-নব রূপে এস প্রাণে, দশমীর শুভেচ্ছা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এদিকে কলকাতা পুরসভা আগেই জানিয়েছে, গত বছরের মতোই এবারও কঠোরভাবে করোনাবিধি মেনেই বিসর্জন হবে শহরের ঘাটগুলিতে। নিমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট, বাজা কদমতলা ঘাটেই শহরের সিংহভাগ প্রতিমা বিসর্জন হয়। গঙ্গাদূষণ রুখতে এবারও যথারীতি ক্রেন রাখা হবে বার্জে। প্রতিমা জলে ভাসানোর প্রায় পরমুহুর্তেই জল থেকে ক্রেনের সাহায্যে কাঠামো তুলে নেওয়া হচ্ছে৷ মালা, বেলপাতা কিংবা কোনও উপাচারের সামগ্রী এবারও জলে ফেলা যাচ্ছে না। এ সব সামগ্রী ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হয়েছে গঙ্গার ঘাটে। প্রথমদিন প্রায় দেড় হাজারের বেশি প্রতিমা গঙ্গায় বিসর্জন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে ওই সংখ্যা এখনও স্পর্শ করেনি।