সংবাদদাতা, নদিয়া : দুর্গাপুজো ঘিরে ধীরে ধীরে জমে উঠেছে বাজার। কিন্তু তার মাঝে শেষ মুহূর্তের নিম্নচাপের একটানা বৃষ্টিতে মৃৎশিল্পীরা পড়েছেন বিড়ম্বনায়। এই অবস্থায় ত্রিপল, পলিথিন দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে তাঁদের অবস্থা নাজেহাল। প্রভূত সমস্যায় পড়েছেন কৃষ্ণনগরে মৃৎশিল্পের আঁতুড়ঘর ঘূর্ণি, কুমোরপাড়া, ঘরামিপাড়া, আনন্দময়ীতলা, নতুনবাজার পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা। এবার প্রতিমার অর্ডার ব্যাপক। কিন্তু বৃষ্টিতে কৃষ্ণনগরের পটুয়াপাড়া আছে উদ্বেগে। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ব্লো ল্যাম্প, ঘুঁটে, কাঠকয়লা, কেরোসিন জোগাড় করে প্রতিমার কাজ সারতে হচ্ছে। অর্ডারি প্রতিমার ক্ষেত্রে দরাদরি হয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত এই খরচ মৃৎশিল্পীরা পাবেন না। ফলে লাভের অঙ্ক কমবে বলে তাঁদের বক্তব্য।
আরও পড়ুন-পাঁচমুড়ার টেরাকোটায় সাজবে ভিনরাজ্যের মণ্ডপ
কৃষ্ণনগরে সাধারণত মৃৎশিল্পীদের কোনও আধুনিক স্টুডিও নেই। কয়েকজন শিল্পীর নিজস্ব স্টুডিও আছে। তাঁদের কাজ করতে অসুবিধা নেই। স্টুডিওতে সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে। তবে হাতে গোনা দু-তিনজন মৃৎশিল্পী বাদে অধিকাংশই রাস্তার বাইরে প্রতিমা পলিথিন মুড়িয়ে রেখেছেন। তাতে আশপাশ দিয়ে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পলিথিনের মধ্যে ঢুকে প্রতিমার গায়ে লেপা মাটি গলিয়ে দিচ্ছে। বৃষ্টির জল মাটিতে পড়ে তার ছাঁটও যাচ্ছে প্রতিমার গায়ে। এ প্রসঙ্গে ঘূর্ণির মৃৎশিল্পী প্রদীপ পাল বলেন, প্রতিমার গায়ের মাটি শুকিয়ে এখন রঙ দেওয়ার কাজ চলছে। তার মধ্যে একটানা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। বৃষ্টিতে লেবাররা কাজ করতে পারছে না। কিন্তু পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে। এতে কাজের ক্ষতি হচ্ছে। আনন্দময়ীতলার মৃৎশিল্পী কাজল পাল বলেন, এবার ভাল বাজার থাকায় একগাদা অর্ডার নিয়েছি। একটানা বৃষ্টি হওয়ায় এখন সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা পলিথিন, ত্রিপল নিয়ে কাজ করি। শুকোনোর জন্য প্রতিমাকে বাইরে রাখতেই হয়। তাই সমস্যা হচ্ছে। ব্লো ল্যাম্প, ঘুঁটে, কাঠকয়লা ব্যবহার করতে হচ্ছে। এই অতিরিক্ত খরচ তো আর পাওয়া যাবে না। তাই বৃষ্টিতে আমাদের ক্ষতিই হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী সুবীর পালের নিজস্ব স্টুডিও আছে। তিনি বলেন, অধিকাংশ মৃৎশিল্পীর স্টুডিও নেই। কাজ করতে অসুবিধা হয়। তাই তাঁদের বিকল্প ব্যবস্থা রাখতেই হয়। পুজো উদ্যোক্তারাও যেন এঁদের বাড়তি খরচের বিষয়টি নিয়ে ভাবেন।