সংবাদদাতা, তমলুক : ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিস অ্যাক্টকে ভেঙে একাধিক নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালের কাজে অবহেলা করার জন্য ৯৩ জন চিকিৎসককে শোকজ করে দৃষ্টান্ত তৈরি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি স্বাস্থ্যসাথী বিল অনুমোদন করার সময় বেশ কিছু অনিয়ম দেখতে পান। যেমন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দুটি নার্সিংহোম একই দিনে একই সময়ে একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে অপারেশন করানোর বিল জমা পড়েছে। যা বাস্তবে সম্ভব নয়। দফতরকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলাশাসক। তদন্তে নেমে ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট পোর্টালে দফতর দেখতে পায়, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কোনও কোনও চিকিৎসক ১৫, কেউ ১৬, কেউ কেউ ২৯টি নার্সিংহোমের সঙ্গে একেবারে খাতায়-কলমে যুক্ত। এরপরই ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট ভাঙার অভিযোগে একযোগে ৯৩ জন চিকিৎসককে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা তলব করা হয়।
আরও পড়ুন-মহামেডানের জার্সি উদ্বোধনে সৌরভ
শোকজের তালিকায় থাকা এক চিকিৎসক তমলুক শহরের ২৯টি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়। এরকম ৩ বা তার বেশি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত ৯৩ জন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। তালিকায় তমলুক, কাঁথি-সহ সমগ্র জেলার চিকিৎসকই আছেন। এছাড়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বেনিয়মের তদন্ত করতে গিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানতে পারে নার্সিংহোমে নামকাওয়াস্তে চিকিৎসক রাখার কীর্তি। তাই জেলার প্রায় ৭০টি নার্সিংহোমেও নোটিস পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ, এই বেনিয়ম দীর্ঘদিন চলছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের চিঠি পাঠিয়ে কীভাবে এতগুলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত, প্রতিটি নার্সিংহোমে কতটা সময় দেন তাও উল্লেখ করতে বলেন। নার্সিংহোম কর্তাদের নোটিস ধরিয়ে বলা হয়েছে, তাঁরা কীভাবে চিকিৎসকদের থেকে পরিষেবা পান, জানাতে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘আরজি করের ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। স্বাস্থ্যসাথীর বিল খতিয়ে দেখে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ায় সে সম্পর্কে ডাক্তার, নার্সিংহোমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।’