দেবর্ষি মজুমদার, রামপুরহাট: কাঁদরের পাশে গা ছম-ছম করা ঘন ‘মাটিমহল’ জঙ্গলে ব্যাঘ্রচণ্ডী তলায় অম্বুবাচী উপলক্ষে পুজো। রামপুরহাট থেকে ঝাড়খণ্ডের দুমকা রোড ধরে তিন কিলোমিটার গেলেই বাঁদিকে দেবীপুর গ্রাম। তার পাশেই সেচ কাঁদরের পাশে ঘন জঙ্গল। তারই নাম মাটিমহল। সেখানেই কাকভোর থেকে চলছে খিচুড়ি ভোগের আয়োজন। হাজার ছয়েক মানুষ পাত পেড়ে খান। শামিল সব ধর্মের মানুষ। এটাই বাংলার সংস্কৃতি। মায়ের ভোগ তৈরিতে কোমর বেঁধে লেগেছেন কাপাস শেখ, বাসাই শেখ, বানুধন টুডু, সাবা হেমব্রম, দিলীপ মণ্ডল, বৃন্দাবন মণ্ডলরা। দেবীর নাম কেন ব্যাঘ্রচণ্ডী?
আরও পড়ুন-বিপদ নাশ করেন তিনি বিপত্তারিণী
২০১১ সালে বনহাট গ্রামের স্বপন মণ্ডল মন্দির সংস্কার করেন। রাজস্থান থেকে পাথরের ব্যাঘ্রচণ্ডী মূর্তি নিয়ে স্থাপন করেন। একই জায়গায় শিবমন্দির উদ্বোধন করা হয়। কথিত ওই জায়গায় একসময় ছোট্ট একটি ঢিপি দেখতে পান দেবীপুর গ্রামের মানুষ। উৎসুক মানুষ ওই ঢিপি নিয়ে ইতিহাস ঘাঁটতে শুরু করেন। পুজোর মুল উদ্যোক্তা স্বপন মণ্ডল বলেন, ১২৯২ সালে ঝাড়খণ্ডের মলুটির রাজা বাজ বসন্ত জমিদার ছিলেন। তাঁর ছেলে বান রায় ১৩০০ সালে ছোট্ট মন্দির তৈরি করেন। নাম দেওয়া হয় বামরায়চণ্ডী। বর্তমানে মন্দিরের নাম বদলে হয় ব্যাঘ্রচণ্ডী। আগে প্রতিবছর ৭ আষাঢ় অম্বুবাচীতে পুজো হত ঢিপির উপর। এখন পুজো উপলক্ষে জঙ্গলের মধ্যে বসে মেলা। দুপুরে খিচুড়ি ভোগ, বিকেলে জিলিপি খেতে খেতে বাড়ি ফেরার মজাই আলাদা। স্বপন বলেন, এই পুজো সকলের। সম্প্রীতির উৎসব। মেলায় বহু মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এমনকী তাঁরা তদারকিতেও শামিল হন। এটাই বাংলার সংস্কৃতি।