সংবাদদাতা, দুর্গাপুর : শনিবার দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের মূল প্রবেশপথের সামনে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বিশাল সমাবেশের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলায় শ্রমিক-বিরোধী শ্রম কোড চালু করতে দেওয়া হবে না বলে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক প্রমুখ নেতৃত্ব। সভায় আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্র সরকার শ্রমিক-বিরোধী আইন এনে মালিক পক্ষের সুবিধার্থে ১২ ঘণ্টা কাজের বিধান চালু করেছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য সেই আইন মেনে নিয়েছে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্তালিন ওই আইন মেনে নেননি। এই দুই রাজ্য সরাসরি বিরোধিতা করেছে এবং নিজেদের রাজ্যে কালা আইন চালু করতে দেয়নি।
আরও পড়ুন-বন দফতরের অভিনব উদ্যোগ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে, বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় গাছের উপর চারা রোপণ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছেন তাতে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ শ্রমিক নিজেদের নাম লিখিয়েছেন। এছাড়াও ঋতব্রত রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে কেরলের শ্রমমন্ত্রীর বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আমাদের শ্রমমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রের শ্রম আইন মানছে না। তিনি কেরলের শ্রমমন্ত্রীর কাছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের বিষয়টি তুলে ধরেন বৈঠকে। ঋতব্রতর দাবি, কেরলের শ্রমমন্ত্রী অবাক হয়ে যান এত অসংগঠিত শ্রমিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্পে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন দেখে। শনিবারের ভিড়ে ঠাসা সভা থেকে কার্যত রাজ্য আইএনটিটিইউসি সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই রাজ্যে কেন্দ্রের কারখানাগুলি উদগ্রীব হয়ে আছে কেন্দ্রের শ্রম আইন চালু করতে। কিন্তু মুখমন্ত্রীর বিরোধিতায় ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের বেসরকারি কারখানায় নিয়োগ সংক্রান্ত পোর্টাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই পোর্টালের মাধ্যমেই এ রাজ্যের কারখানাগুলিতে শ্রমিক নিয়োগ হবে। তিনি আরও বলেন, চটশিল্পকে ধ্বংস করার জন্য বিজেপি সরকার চক্রান্ত করছে। রাজ্যের চটের বস্তা দিয়েই এত দিন খাদ্যশস্য বহন করা হত। কিন্তু কেন্দ্রের চক্রান্তের ফলে ইদানিং চটের বস্তার অর্ডার আর বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসছে না। কেন্দ্র আগের মতো অর্ডার দিচ্ছে না। এর কারণ ওরা বাংলার চট শিল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঋতব্রত সাফ বলেন, যাঁরা নিয়োগ সংক্রান্ত পোর্টালের বিরোধিতা করছেন তাঁরা কেন এটা করছেন তা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অনড়। এই পোর্টালের মাধ্যমেই কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ চলবে।