অসীম চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : অজয়, টুমনির কোলে জন্ম নেওয়া বর্ধিষ্ণু গ্রাম কুলডিহা। কাঁকসার এই গ্রামের গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের কালীপুজো এবার আড়াইশো বছরে পড়েছে। এই পরিবারের কালীপুজোকে ঘিরে আজও নানান কিংবদন্তি ও গা-ছমছমে ইতিহাস বাড়ির প্রতিটি ইটের খাঁজে যেন উঁকি দিচ্ছে। গ্রামের মানুষের কাছে ‘গাঙ্গুলিবাড়ি’ আজও এক মহাপুণ্যের আকরভূমি। পুজোর শুরু মুঘল আমলে।
আরও পড়ুন-কুলডিহায় আজও মুঘল আমলের পুজো
পরিবারের অশীতিপর সদস্য বিরিঞ্চি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ঝাপসা স্মৃতির ঝাঁপি থেকে তুলে আনলেন নানা মণিমুক্তোয় ভরা এক অতিপ্রাচীন কাহিনী। বললেন, হুগলির চন্দননগর এলাকা থেকে কুলডিহা গ্রামের অদূরে এসে তপস্যা শুরু করেন বামাপতিনন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক মহাসাধক। বামাচারী সেই তান্ত্রিক এখানেই স্থাপন করেন পঞ্চমুণ্ডির আসন। ক্রমে গাঙ্গুলিবাড়ির সদস্যরাও ব্রহ্মচারীজির সান্নিধ্যে আসতে শুরু করেন। দীক্ষিত হন তাঁর কাছে। পরিবারের তৎকালীন কর্তা কৃষ্ণচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন কালীমন্দির। পরিবারের বর্তমান কর্তা শিশির গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সেই মুঘল আমল থেকেই প্রতি কার্তিকী অমাবস্যায় ছাগবলি হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন-জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড ২ জেলায়
পুজোয় সন্ধ্যারতি হয় না। পরিবর্তে দুধ ও ঘণ্টাবাদ্য সহযোগে দেবীর শীতলারতি হয়ে থাকে। পুজো হয় তন্ত্রমতে। নিত্য অন্নভোগ হয়। ছাগবলির সময় আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের মানুষ ভিড় করেন বলি দেখতে। বর্তমান প্রজন্মের সদস্য পিনাকী, দেবার্ঘ্যরা বলেন, গাঙ্গুলি পরিবারের সব সদস্য যে যেখানে থাকেন কালীপুজোর দিন সকালের মধ্যেই এই বাড়িতে হাজির হয়ে যান। পুরো গ্রামের মানুষকে নিয়ে কালীপুজো ও দীপাবলির মহানন্দে মেতে ওঠেন পরিবারের সকলেই।