প্রতিবেদন : চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে বেনজির তাপপ্রবাহ দেখেছে বিশ্ব। এই সময় দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহের ফলে ৯০ জন মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অনুমান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা বেড়েছে ৩০ গুণ। বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক অটো বলেছেন, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের সূচনা হওয়ার আগে প্রতি ৩ হাজার বছরে একবার তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বদল ঘটার সম্ভাবনা ছিল। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন কনসোর্টিয়ামে বিজ্ঞানী ও অন্য বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন, বিশ্বে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উষ্ণতা বাড়ার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা ৩০ গুণ বেশি হয়ে গিয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন উষ্ণতার প্রভাবে তাপপ্রবাহের মধ্যে ব্যবধান আরও কমার আশঙ্কা।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, পৃথিবীর ভূমিপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রির চার-পঞ্চমাংশ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়ার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছরে একবার এই তাপপ্রবাহ আছড়ে পড়তে পারে। প্যারিস চুক্তির অধীনে কার্বন নির্গমন রোধে বর্তমান জাতীয় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, বিশ্ব ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’-এর মুখোমুখি হবে। ভারত ও পাকিস্তানের এ বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে যে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তা অতীতের বহু রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে পরোক্ষভাবে কাজের সময় হ্রাস এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন-হেরে চাপে ভারত এশিয়া কাপ হকি
মাত্রাতিরিক্ত গরমের ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপকভাবে গম উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গম রফতানি বন্ধের পথে হেঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামবৃদ্ধির পিছনে বর্ধিত তাপপ্রবাহ অন্যতম কারণ। পরিবেশের এই সমস্যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের উপর। পাকিস্তানের জলবায়ু বিজ্ঞানী ফাহাদ সাঈদের মতে, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি গ্লোবাল ওয়ার্মিং সমাজের দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য বড় সঙ্কট ডেকে আনবে।