একটাই ছবিতে একসঙ্গে এতগুলো চরিত্র শুনেই কি রাজি হয়েছিলেন ছবিটা করতে?
আকাশ যখন আমার কাছে চিত্রনাট্য নিয়ে আসে প্রথমবার শোনার পর খুব ইন্টারেস্টিং মনে হলেও স্ক্রিপ্টের সবটা আমি তখন বুঝে উঠতে পারিনি। সাইকোলজিকাল থ্রিলার হলেও বেশ কঠিন মনে হয়েছিল। তখন বারবার স্ক্রিপ্টটা পড়ি। পড়তে পড়তে বিষয়টা বুঝতে পারি। এই ছবির ঘটনা বলুন বা চরিত্র একটার সঙ্গে আর একটা যুক্ত। আসলে ওরা চিত্রনাট্যটা একটু জটিল করে ফেলেছিল। তখন আমি আকাশকে বলি একটু ঘষামাজা করতে যাতে দর্শক ছবিটা বুঝতে পারে। তখন থেকেই মনে হয়েছিল খুব চ্যালেঞ্জিং হবে চরিত্রগুলোতে অভিনয়।
এই ছবিতে প্রথমবার প্রস্থেটিক মেক-আপে। কী কী চরিত্রে অভিনয় করলেন?
প্রস্থেটিক মেক-আপে আমার পাঁচটা চরিত্র রয়েছে। একজন মাদারি যে বাঁদর খেলা দেখায়, একজন ট্রান্সজেন্ডার, একজন মহিলা, একজন ছৌ-নাচ শিল্পী ও একজন বৃদ্ধ। এছাড়া চার্বাক এবং ছবির যিনি নায়ক সুপারস্টার অভিমন্যু ব্যানার্জির চরিত্র।
সাতটা লুকের প্রস্তুতি কী রকম ছিল?
(সোমনাথদা) মানে মেকাপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু আমার সব ক’টা লুক তৈরি করেছেন। এক-একটা মেকাপে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। শ্যুটিংয়ের দিন লোকেশনে গিয়ে বসে আলোচনা সেরে নিতাম তারপর ব্রেকফাস্ট করে ফেলতাম কারণ একবার মেকাপ হয়ে যাবার পর কিছু আর খাওয়া সম্ভব হত না। শুধু জলতেষ্টা পেলে স্ট্র দিয়ে একটু জল বা লস্যি খেতাম। শ্যুটিংয়ের পর মেকাপ তুলতেও প্রায় দেড়-দু’ঘণ্টা লেগে যেত। এবার ফ্রেশ হয়ে আবার কিছু খেয়ে একটু চোখে-মুখে জল দিয়ে আবার পরের লুকের জন্য মেকাপ নিতে বসে যেতাম।
একদিনে ক’বার মেকাপ বদল করতে হয়েছে?
প্রথমে ঠিক হয়েছিল একদিনে একটাই লুকে শ্যুট হবে। এতে গোটা বিষয়টা আমার জন্য সহজ হত কিন্তু লোকেশনে যাবার পর দেখলাম স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ওই লোকেশনে হয়তো দুটো কী তিনটে লুক ডিমান্ড করছে তখন সিদ্ধান্ত বদল করি। তা না হলে একটা লোকেশনে বারবার আসতে হলে ছবির বাজেট বেড়ে যেত অনেকটাই। সেটা সম্ভব নয় ফলে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়। এক একদিনে আমি দুটো, তিনটে করে লুকেও কাজ করেছি। প্রচণ্ড হেকটিক হয়েছে কিন্তু খুব এনজয় করেছি।
একটা চরিত্র থেকে আর একটা চরিত্রে সেই সঙ্গে ভিন্ন লুক ও ভিন্ন অভিব্যক্তি— এই বদলটা কীভাবে আনলেন?
এটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল আমার কাছে। এই ছবিতে পারফর্মেন্সটাই সব। লুকটা সোমনাথদা করে দিলেন এবার সেই সত্তায় নিজেকে মেলে ধরাটা পুরো আমার দায়িত্ব ছিল। সুতরাং শ্যুটিং করতে গিয়েও বারবার স্ক্রিপটা পড়তে হয়েছে আমাকে। শটে যাবার আগে আকাশকে ডেকে নিতাম। ওর কাছেও চরিত্রটা সম্পর্কে ওঁর দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইতাম। এমন-এমন কিছু দৃশ্য শ্যুট হয়েছে যে সেই দৃশ্যে কী করব সেটাই তখনও জানি না। মানে ভাবতে পারতাম না কীভাবে করব। কিন্তু ঠিক হয়ে গেছে। প্রপার হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে। না হলে এত শেডে কাজ করা সম্ভব ছিল না। কতটা চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছি সেটা দর্শক বলবে।
ইধিকার সঙ্গে অভিনয়?
ইধিকা খুব ভাল পারফর্মার। ভাল কাজ করছে। আমার প্রোডাকশন হাউসেরই প্রথম আবিষ্কার ইধিকা। এই ছবিতে ওর চরিত্রেরও একাধিক শেড রয়েছে যা বেশ চ্যালেঞ্জিং।