নয়াদিল্লি : একদিকে ভারতের কোটিপতি ঋণখেলাপীরা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বিপুল টাকা ধার নিয়ে তা শোধ না করেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে তারপরেও বিপুল অঙ্কের অনাদায়ী ঋণ মকুব করে যাছে ব্যাঙ্কগুলি। এই পরিস্থিতিই চলছে মোদি জমানায়। খোদ কেন্দ্রের পেশ করা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি গত ৫ বছরে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে।
আরও পড়ুন-স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দিন মহরমের আশুরা
রাজ্যসভায় এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত কারাদ। সম্প্রতি ঋণখেলাপী কোটিপতিদের সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে বিপুল পরিমাণ ঋণ মকুবের সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। এবার এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ব্যাঙ্কগুলির দ্বারা ঋণ মকুবের পরিমাণ ১,৫৭,০৯৬ কোটি টাকা, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ২,০২,৭৮১ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে ২,৩৪,১৭০ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ২,৩৬,২৬৫ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে ১,৬১,৩২৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত পাঁচটি আর্থিক বছরে (২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২) মোট ৯,৯১,৬৪০ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ মকুব করেছে এদেশের ব্যাঙ্কগুলি।
আরও পড়ুন-চকোলেট চেখে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা রোজগার!
সংসদে পেশ করা তথ্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেছেন, নির্ধারিত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক এবং সমস্ত ভারতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে তাদের সেন্ট্রাল ‘রিপোজিটরি অফ ইনফরমেশন অফ লার্জ ক্রেডিটস’ এর অধীনে ৫ কোটি এবং তার বেশি টাকার সামগ্রিক ক্রেডিট এক্সপোজার সহ সমস্ত ঋণগ্রহীতার নির্দিষ্ট ক্রেডিট তথ্য সরবরাহ করতে হয়। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেড শীর্ষ ২৫ জনের মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এর পরে রয়েছে ইরা ইনফ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং, কনকাস্ট স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার, আরইআই এগ্রো লিমিটেড এবং এবিজি শিপইয়ার্ড লিমিটেড।
আরও পড়ুন-দোষী সাব্যস্ত যোগীর মন্ত্রী আদালত থেকে নিখোঁজ
পলাতক হীরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির মালিকানাধীন গীতাঞ্জলি জেমসের কাছে ব্যাঙ্কের পাওনা ৭,১১০ কোটি টাকা। ইরা ইনফ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাছে ৫,৮৭৯ কোটি টাকা এবং কনকাস্ট স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের কাছে ৪,১০৭ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। উল্লেখ্য, যখন কোনও ব্যাঙ্ক তার গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে অক্ষম হয়, তখন সেই পরিমাণ নন পারফর্মিং অ্যাকাউন্টে (এনপিএ) চলে যায়। এরপর যে সমস্ত ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, তারা এনপিএর পরিমাণ মকুব করে। ব্যাঙ্কগুলি তাদের ব্যালান্স শিটকে সুন্দর দেখানোর জন্য ৪ বছরের পুরনো মন্দ ঋণ বাতিল করে