চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: ইস্টবেঙ্গলের হোম ম্যাচে এখন সমর্থকেরা প্রিয় দলের পাশে থেকে মাঠ ভরাতে আসেন না। তাঁদের যত ক্ষোভ, হতাশা, বিপ্লব সোশ্যাল মিডিয়ায়। কঠিন সময়েও ফুটবলারদের জন্য গলা ফাটাতে যুবভারতীর গ্যালারিতে নেই হাজার দশেকের বেশি লাল-হলুদ জনতা। মাঠে বসে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন দেখার সুযোগটাও তাঁরা হাতছাড়া করলেন। দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও পাঞ্জাব এফসি-কে চার গোল দিয়ে (৪-২) এক ম্যাচ পর জয়ের সরণিতে ফিরল ইস্টবেঙ্গল।আইএসএলে তিন প্রধানের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলই প্রথম দল যারা দ্বিতীয়ার্ধে চার গোল করে জয় তুলে নিল।
দিয়ামানতাকোস, ক্রেসপোদের অনুপস্থিতিতে মাঠ মাতালেন বিষ্ণু, ডেভিডরা। ভরসা দিলেন ক্লেটন সিলভাও। জিতলেও লিগ টেবলে লাল-হলুদের অবস্থানে কোনও বদল হয়নি। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এগারো নম্বরেই অস্কার ব্রুজোর দল। এই জয়ে বেঁচে থাকল ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফ স্বপ্ন।
আরও পড়ুন-বাম আমলে নিয়োগে দুর্নীতি, নথি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
প্রথমার্ধটা যদি হয় লুকা মাজসেনদের, দ্বিতীয়ার্ধে ২০ মিনিটের মশাল-ঝড়ে কার্যত উড়ে গেল পাঞ্জাব।
চোটে মরশুম শেষ মাধি তালালের। ক্রেসপো, দিমিরাও ছিলেন না। লাল কার্ডের নির্বাসনের কারণে ছিলেন না জিকসন সিংও। অনেকটা বাধ্য হয়েই লুকা, পুলগা ভিদালদের আটকাতে মাঝমাঠে আনোয়ার আলিকে তুলে আনেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। ৪-৪-১-১ ফর্মেশনে উপরে ডেভিডের একটু নিচে অপারেট করেন ক্লেটন সিলভা। অস্কারের পরিকল্পনা অবশ্য আংশিক খাটল। কারণ, প্রথমার্ধ দেখে মনে হয়নি ইস্টবেঙ্গল এভাবে প্রত্যাবর্তন করতে পারে। রাকিপ ও আনোয়ারের ভুলে ২১ ও ৪১ মিনিটে দুটো গোল হজম করে অস্কারের দল। পাঞ্জাবের দুই গোলদাতা আসমির সুলজিচ ও পুলগা ভিদাল।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অস্কারের একটা পরিবর্তনেই ইস্টবেঙ্গল অন্য চেহারায়। মাথায় চোট পাওয়া মহেশের জায়গায় নামেন বিষ্ণু। প্রথমার্ধের অচল উইং সচল হয়। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণে আসে। ৪৭ মিনিটে এক গোল শোধ ইস্টবেঙ্গলের। ক্লেটনের সেন্টার থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন হিজাজি মাহের। মিনিট আটেক পর বিষ্ণুর গোলে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। ৬০ মিনিটে ডেভিড-নন্দর যুগলবন্দিতে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। গোলটি অবশ্য আত্মঘাতী।লাল-হলুদ আক্রমণের চাপে নন্দর ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে গোলে ঢুকিয়ে দেন পাঞ্জাবের সুরেশ মিতাই। ৬৪ মিনিটে দশজন হয়ে যায় পাঞ্জাব। লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার লুংডিম। তার আগে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চোট পেয়ে বেরিয়ে যান পাঞ্জাবের ক্রিয়েশিয়ান স্টপার ইভান নোভোসেলেচ।দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার মাঠ ছাড়ার পরেই ভেঙে পড়ে পাঞ্জাব রক্ষণ। ৬৭ মিনিটে বিষ্ণু-ডেভিড যুগলবন্দিতে চতুর্থ গোল লাল-হলুদের। বিষ্ণুর ক্রসে প্রায় মাটিতে শুয়ে ফ্লাইং হেডে গোল ডেভিডের। খেলার সুযোগ না পেয়ে আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছিলেন। দিমিরা না থাকার সুযোগ নিয়ে এদিন ম্যাচের সেরা মিজো স্ট্রাইকার।