প্রতিবেদন : দিল্লিতে যদি আমাদের সরকার— ইন্ডিয়া জোট (INDIA Alliance)— ক্ষমতায় আসে এনআরসি, সিএএ, ইউনিফর্ম সিভিল কোড আমরা বাতিল করব। সারি-সারনা ধর্ম-সহ অন্যান্য ভূমিজ জাতির সমস্ত দাবিদাওয়া আমরাই পূরণ করব। শুক্রবার ঝাড়গ্রামে দলীয় প্রার্থী কালীপদ সোরেনের প্রচারসভা থেকে সদর্পে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মোদি এলে কারও কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। এনআরসি-সিএএ-ইউনিফর্ম সিভিল কোড করে সবার অস্তিত্ব কেড়ে নেবে। আজ পর্যন্ত সারি-সারনা ধর্ম করেছে? করেনি। বারবার লেখা সত্ত্বেও বিজেপি করেনি।
সব থেকে বড় চোর বিজেপি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সব থেকে বড় চোর বিজেপি। ওরা দেশটাকে বিক্রি করে দিয়েছে। সব ইন্ডাস্ট্রি বিক্রি করে দিয়েছে, আর সব টাকা পকেটে ভরেছে। মোদিবাবু, তোমার টাকার দাম কত, অর্থমন্ত্রী তোমার টাকার দাম কত, আর মানুষের জীবনের দাম কত, একবার ভেবে দেখেছ?
মিথ্যা কথা বলে বিজেপির চেষ্টা : তাঁর কথায়, ‘ডেসপ্যারেট’ হয়ে মিথ্যা কথা বলে বিজেপি চেষ্টা করছে যাতে কোনওরকমে ভোটে জেতা যায়। আর ভোটে জেতার পর ইউসিসি করে সবার ধর্ম বাতিল করে দেবে, কারও কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। মোদি এলে দেশে আর ইলেকশন করতে দেবে না, এটাই লাস্ট ইলেকশন হবে। তখন গণতন্ত্র পাবেন কোথায়? মানুষ দাবি করবেন কোথায়?
আরও পড়ুন-কুরুচিকর আক্রমণ, কমিশনের শোকজ, পাল্টা জবাব
জঙ্গলের অধিকার আদিবাসীর : মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, আদিবাসী জমি হস্তান্তর চলবে না। অন্য সম্প্রদায় এসে টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারবে না আদিবাসী সম্পত্তি। আদিবাসীর সম্পত্তির অধিকার, বনের অধিকার কাড়া যাবে না। আদিবাসীরা আত্ম-সম্মাননা নিয়ে আপনারা বাঁচবেন। আদিবাসীদের জঙ্গলের অধিকার কেউ কেড়ে নিয়ে পারবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা, এটা আমাদের শপথ। আমরা যা বলি, তা করি।
সিএএ আদতে ভাঁওতা : এদিন সিএএ নিয়ে ঝাড়গ্রামের সভা থেকেও বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিদেশে পড়তে গেলে বা কাজ করতে গেলে কিংবা অনেক বছর থাকলে যেমন, একটা করে গ্রিন কার্ড দেয়, সিএএ-ও তেমনই একটা ভাঁওতা। এদের কেউ বিশ্বাস করবে না। সব মিথ্যা, ভাঁওতা ছাড়া কিছু নয়। ভোটের আগে রাজনীতি। ভোট ফুরোলেই সবাইকে জেলে ভরে দেবে।
জঙ্গলমহলে শিক্ষার প্রসার : জঙ্গলমহলে শিক্ষার প্রসারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে পড়াশোনায় পিছিয়ে ছিল জঙ্গলমহল। আজ এখানে ছেলেমেয়েরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে, বড় বড় অফিসার হচ্ছে। এটা আমার গর্ব। সাঁওতালি ভাষাকে কেউ গুরুত্ব দিত না। আমরা এসে প্রথম এই ভাষাকে গুরুত্ব দিই।
ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থী পেশায় সরকারি চিকিৎসক। এ-প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি চাইলেই ওঁর ছাড়পত্র আটকে দিতে পারতাম। ওদের বেশি লোভ তো! ভাবলাম, যাক। টাকা করে আসুক। এলাকায় ডাক্তার নেই। উনি ভোটে লড়লে ডাক্তারি কে করবে? মানুষ পরিষেবা কোথায় পাবেন?